বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৬:১২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
সাংবাদিকের পা ভেঙে দেয়ার ১২ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ জেলা ছাত্রলীগ সেক্রেটারির বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ পাবনায় বিদ্যুতায়িত হয়ে ইসলামি মাদরাসার শিক্ষকের মৃত্যু ফেসবুকের মাধ্যমে মেয়েদের ব্ল্যাকমেইলিং করার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৪ কাশিনাথপুরে ব্যাংক লোপাট, নতুন দুই কর্মকর্তার যোগদান, লেনদেন স্বাভাবিক জাতীয় শিশু দিবসে জেলা পরিষদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ চাটমোহরে করিমন চাপায় স্কুলছাত্রী নিহত, সড়ক অবরোধ ঈশ্বরদী জমজম হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ধর্ষণের পর আত্মগোপনে থাকা যুবক ঢাকা থেকে গ্রেফতার

ঈশ্বরদীতে যুবলীগ নেতাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি, পাবনামেইল টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৩

পাবনার ঈশ্বরদীতে যুবলীগ নেতাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হাত পা বেঁধে নির্যাতন ও জোরপূর্বক স্বীকোরোক্তি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাসের শ্যালক কথিত যুবলীগ নেতা মিলন চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী যুবলীগ নেতার নাম রবিউল ইসলাম রবি ( ৫০), তিনি ঈশ্বরদী পৌর ৩ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সভাপতি। নির্যাতনের পর ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে রবিউলকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ পুলিশেও সোপর্দ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঈশ্বরদী পৌর এলাকার সাঁড়া গোপালপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী রবিউলের স্ত্রী রোজিনা খাতুন জানান, মঙ্গলবার রাত ১২ টার দিকে সাঁড়া গোপালপুর নিজ বাড়ি থেকে মিলন চৌধুরীর ছোট ভাই দীপ চৌধুরীর সাথে কয়েকটি মোটর সাইকেলে আসা একদল যুবক রবিউলকে বাড়ি থেকে ডেকে মিলন চৌধুরীর কার্যালয়ে নিয়ে যায়। রাত দেড়টার দিকে তিনি প্রতিবেশীদের কাছে খবর পান মিলন চৌধুরী ও তার লোকজন পার্শ¦বর্তী রেল লাইনে ফেলে রেখেছে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তাকে অস্ত্রসহ পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

রোজিনা খাতুন জানান, রবিউল দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে পাবনা ৪ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর অনুসারী । বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাসের অনুসারী মিলন চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে রবিউলকে মিন্টুর পক্ষ ত্যাগ করে তার সাথে কাজ করার জন্য চাপ দিয়ে আসছে। গতকাল রাতে তাকে অফিসে নিয়ে জোরপূর্বক ছবি তুলে রবিউল মিলন চৌধুরীর সাথে যোগ দিয়েছেন বলে প্রচারণা ফেসবুকে পোস্টও দেয় মিলনের অনুসারীরা। রবিউল এর প্রতিবাদ করায় তাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধোর করে রেললাইনে ফেলে হত্যার ভয় দেখিয়ে স্বীকোরোক্তি আদায় করে ফেসবুকে লাইভ করে তারা।

এদিকে, রবিউলকে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় , রবিউলকে হাত পা বেঁধে রেল লাইনে ফেলে পেটাচ্ছেন কয়েকজন যুবক। মিলন চৌধুরী রবিউলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাকে নানা প্রশ্ন করছেন। জঙ্গলে ওঁত পেতে থাকা রবিউলের কাছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র গুলিসহ পাওয়া গেছে জানিয়ে আবুল কালাম আজাদ মিন্টু ও জুবায়ের মিলন ও দীপকে হত্যার জন্য পাঠিয়েছেন কিনা জানতে চাইছেন। একপর্যায়ে, রবিউল তা স্বীকার করলে মিলন বলেন, মিন্টু ও জুবায়েরের সাথে বিএনপির কয়েকজন কর্মী আওয়ামীলীগ শেষ করতে তাকে পাঠিয়েছেন। এ সময় রবিউল আওয়ামীলীগকে নির্যাতন করে শেষ করা যায়না বলে প্রতিবাদ জানালে আবারো মারের ভয় দেখান মিলন ।

তবে, আগ্নোয়াস্ত্র সহ রবিউলকে পুলিশে দেয়ার ঘটনাকে পরিকল্পিত নাটক বলে দাবি করেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ মিন্টু। তিনি বলেন, মিলন চৌধুরীর কোন দলীয় পদ নেই। রবিউল আওয়ামীলীগের ত্যাগী কর্মী , সাবেক যুবলীগ নেতা। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির কোন অভিযোগ নেই। নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন সামনে রেখে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতেই আমার ও আমার অনুসারী জুবায়ের বিশ্বাসের নামে মিথ্যে অপবাদ দেয়া হচ্ছে। আমি রবিউলকে নির্যাতনের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সাথে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।

এদিকে, রবিউলকে মারপিটের কথা স্বীকার করলেও তাকে তুলে আনার কথা অসত্য বলে দাবি মিলন চৌধুরীর। তিনি বলেন, তবে, রবিউল আগ্নোয়স্ত্র নিয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জঙ্গলে লুকিয়ে ছিলো। সে গুলি ভরা বন্দুকসহ হাতে নাতে ধরা পড়েছে। সে মিন্টু ও জুবায়েরের নির্দেশে এসেছে বলে স্বীকার করেছেন। ঘটনার উত্তেজনায় সমর্থকরা রবিউলকে মারধোর করে অস্ত্রসহ পুলিশে সোপর্দ করেছে।
পাবনা ৪ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, মিলন আমার দূর সম্পর্কের শ্যালক । তাদের একটি ঝামেলা হয়েছে বলে শুনেছি। আমি ঢাকায় আছি। ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই ।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, রবিউল থানায় আটক রয়েছেন। তবে, সোপর্দকারীদের বর্ণনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রকৃত ঘটনা কি খতিয়ে দেখে দোষী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..