তীব্র খরায় পাবনার সুজানগর উপজেলায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নীচে নেমে গেছে। পানি উঠছে না উপজেলার প্রায় ১০ হাজার টিউবওয়েলে। এতে বিভিন্ন গ্রামে বিশুদ্ধ পানীয়জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ জানায়, সুজানগর পৌরসভাসহ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বাসা-বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬০ হাজার হস্তচালিত টিউবওয়েল রয়েছে। চলতি মৌসুমে প্রচন্ড খরার কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিক নীচে নেমে গেছে। এতে ওই সকল টিউবওয়েলের মধ্যে প্রায় ১০হাজার টিউবওয়েল বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যান্য গুলিতেও খুব সামান্য পানি পাওয়া যাচ্ছে। সহসা বৃষ্টি না হলে অধিকাংশ টিউবওয়েলই বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
সরেজমিনে, মানিকহাট, খলিলপুর, রায়পুর, তাঁতীবন্দ গ্রামে গিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ বাড়িতেই টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। বাড়ির গৃহিনী, কিশোর, কিশোরীরা দলবেঁধে যেসব বাড়িতে পানি উঠছে সেখানে ভীড় করছেন। পানি উঠছে না স্কুলের টিউবওয়েলেও। একে তীব্র গরমে শিক্ষার্থীরা পানীয় জলের সংকটে কষ্টে পড়েছেন।
মানিকহাট গ্রামের আবদুল বাতেন বলেন আমার বাড়ির টিউবওয়েলে গত ১৫/২০দিন পানি উঠছে না। পাশের বাড়ির একটি তারা টিউবওয়েল থেকে অনেক কষ্ট করে পানি টেনে এনে রান্না ও খাবার পানির কাজ চালাচ্ছি। রমজানে পানির এমন কষ্ট হলে গ্রামের মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হবে। একই গ্রামের রজব আলী শেখ বলেন চৈত্র মাস আসার আগে থেকেই আমার টিউবওয়েলে পানি উঠা বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে দূর-দূরান্তের অগভীর তারা টিউবওয়েল থেকে পানি এনে রান্না এবং খাওয়ার পানির চাহিদা মেটাচ্ছি। তবে গোসলসহ অন্যান্য কাজ-কর্মে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ভাটপাড়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, অগভীর টিউবওয়েলে তো বটেই অনেক জায়গায় গভীর নলকূপেও পানি উঠছে না। এতে সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বৃষ্টি না হলে ফসলের ব্যপক ক্ষতি হবে বলেও আশংকা প্রকাশ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে সুজানগর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে নেমে যায়। ফলে এ সময় গভীর এবং অগভীর তারা টিউবওয়েল ছাড়া হস্তচালিত সাধারণ টিউবওয়েল পানি উঠেনা। তবে ভারি বৃষ্টি হলে ওই সকল বন্ধ টিউবওয়েল আবার সচল হয়ে যাবে।
Leave a Reply