কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পাবনার সাঁথিয়ার করমজায় বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো বিলুপ্তপ্রায় লাঠি খেলা। আবহমানকাল ধরে করমজা বাগচী পরিবার এলাকার মানুষের বিনোদনের খোরাক যুগিয়েছে এই লাঠিখেলা। কিন্তু কালের বির্বতনে মানুষ ভুলতে বসেছে এই লাঠিখেলা।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষেরা তাদের নৈমিত্তিক জীবনের উৎসব- যেমন বাংলা বর্ষবরণ, বিবাহ, সুন্নতে খাতনা, চড়ক পূজা, মহরম ইত্যাদি উপলক্ষে বিভিন্ন গ্রামে লাঠি খেলার আয়োজন করতো। ঢাক-ঢোলের বাজনায়, গানের তালে তালে যেন এ আনন্দময় উৎসব আয়োজন। আর কাঁসার ঘন্টার তালে তালে চলতো লাঠির কসরত। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা ও পাল্টা আঘাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন লাঠিয়ালরা। তাতে উৎসাহ দিচ্ছেন শত শত দর্শক। আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে ছিলো উৎসবের আমেজ। লাঠি খেলা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন দর্শকরা। যুবসমাজের মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক আয়োজন রাখতে পারে কার্যকরী ভুমিকা মত আয়োজক সংশ্লিষ্টদের। নিয়মিত এই ধরনের আয়োজনের দাবি দর্শকদের।
করমজা ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন আলী বাগচী বলেন, সমাজ থেকে অন্যায় অপরাধ দূর করতে আর হারানো ঐতিহ্য ধরে রাখতেই এই আয়োজন। বিপথগামী যুব সমাজের মাদকাসক্ততা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধে লাঠি খেলার মত আয়োজন পথ দেখাবে, যুক্ত করবে সম্প্রীতির বাঁধনে। নিয়মিত আয়োজনের জন্য পৃষ্ঠপোষকতার দাবী করেন আয়োজকরা। নির্মল বিনোদনের খোরাক আর গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য এ লাঠি খেলা চোখেই পড়ে না বললেই চলে। সমাজ থেকে অন্যায় অপরাধ দুর করতে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বাগচী পরিবার এই খোলার আয়োজন করার জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
Leave a Reply