পাবনার সাঁথিয়া পৌরসভা নির্বাচনে পর পর তিনবার নির্বাচিত জনপ্রিয় মেয়রকে বাদ দিয়ে অপর ৩ জন প্রার্থীর নামের তালিকা পাঠানো ও কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ওয়ার্ড কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও পৌর আ’লীগ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। এতে আ’লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে,গত ২ ডিসেম্বর ঘোষিত নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুয়ায়ী আগামী ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে সাঁথিয়া পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত ২৪ নভেম্বর সাঁথিয়া উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সাক্ষরিত একটি প্রার্থী তালিকা পাঠিয়েছে জেলা কমিটির কাছে। সেই তালিকায় নাম নেই পর পর তিনবারের নির্বাচিত জনপ্রিয় মেয়র মিরাজুল ইসলামের।
উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক তপন হায়দার সান, পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ম্হবুবুল আলম বাচ্চু ও আ’লীগের নেতা নফিজ উদ্দিনের নাম নাম রয়েছে ওই তালিকায়। বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়র সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ, হতাশা ও নানা প্রশ্নের দেখা দেয়। অপরদিকে পৌর আ’লীগের ওয়ার্ড কমিটির মেয়াদ শেষ না হলেও নির্বাচনের ঠিক পূর্বমুহুর্তে কোন কারণ ছাড়াই কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠনের ফলে ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ওই কমিটির সদস্যদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এজন্য পৌর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ মিলে নবগঠিত অবৈধ ওয়ার্ড কমিটি বাতিলের জন্য পাবনা জেলা আ’লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।ওয়ার্ড কমিটির গঠনের ব্যাপারে ৯নং ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক আতিকুল্লাহ আল মাহাদি জিয়া বলেন, হীনস্বার্থ ও অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য কমিটির মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও এবং কমিটি না ভেঙ্গেই নির্বাচনের আগে নিজেদের পছন্দের লোক দিয়ে তড়িঘড়ি করে কমিটি গঠন করেছে।
মেয়র মিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি আ’লীগের প্রার্থী হয়ে পর পর তিনবার বিজয়ী হয়েছি। তারা কোন ঘোষণা না দিয়ে, মিটিং না করে, প্রার্থীতা আহবান না করেই হীনস্বার্থে আমার নাম বাদ দিয়ে প্রার্থীর তালিকা প্রেরণ করেছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে যাদের নাম দেয়া হয়েছে তারা জনবিচ্ছিন্ন। নফিজ উদ্দীন গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন। তপন হায়দার সান একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর আত্মীয়।সাঁথিযা সরকারি কলেজের শিক্ষক নুরুল ইসলাম তার অত্যাচারে বাড়িতে বসবাস করতে না পেরে তিনি অন্যত্র বাসা ভাড়া করে রয়েছেন। তার নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে এ এসপি সার্কেল(বেড়া) সম্প্রতি তদন্ত করেছেন।
আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ার গত পৌর নির্বাচনে মনোনয়ন না পেয়ে তিনি ক্ষুব্দ হয়ে আমি নৌকার প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচনে আমার বিরোধিতা করে দলের গঠনতন্ত্রবিরোধি কাজ করেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ারকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আ’লীগের গঠনতন্ত্র ২৮/৫ ধারা অনুসারে আমরা ৩ জনের নামের তালিকা প্রেরণ করেছি।
বর্তমান মেয়র পৌরসভার কাঙ্খিত উন্নয়ন করতে পারেনি। তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা চলমান রয়েছে।এসব কারণে তার নাম পাঠানো হয়নি। পৌর ওয়ার্ড কমিটি গঠনের ব্যাপারে তিনি বলেন, দল চাইলে যে কোন সময় নতুন করে কমিটি গঠন করতে পারে।৬৮ পাবনা-১(সাঁথিয়া-বেড়া)এর সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব এ্যাড. শামসুল হক টুকু বলেন,সাঁথিয়া পৌসভার মেয়র প্রার্থীদের নামের তালিকা পাঠানোর ব্যাপারে আমার সাথে কোন পরামর্শ করে নাই এবং আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।
Leave a Reply