দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অসহায় কৃষক গো খামারিদের টার্গেট করে সাজানো হয় পরিকল্পনা। এরপর সুযোগ বুঝে ট্রাক নিয়ে সে বাড়িতে হাজির হয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লুটে নেয়া হয় সর্বস্ব। মূহুর্তেই ডাকাতির মাল ট্রাকে তুলে সটকে পড়ে চক্রটি। অভিনব কায়দায় সারাদেশে ডাকাতি করে আসা এমন ডাকাত চক্রের ছয় সদস্যকে পাবনা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ট্রাক ও ডাকাতি করা সাতটি গরু ও উদ্ধার করা হয়েছে।
রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাবনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (এসপি) মহিবুল ইসলাম খান ডাকাত চক্রটির সম্পর্কে তথ্য জানান।
শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন পাবনার ফরিদপুর উপজেলা নেচরাপাড়া গ্রামের রহমত মোল্লার ছেলে মো. রোকন মোল্লা (২৮), পাবনার চাটমোহরের দোলন গ্রামের মৃত ওয়ারেছ আলীর ছেলে মো. সিহাব উদ্দিন (২৭), পাবনার ফরিদপুরের বিলচান্দ গ্রামের মো. দুলাল মিয়ার ছেলে মো. আল-আমিন (২০), সিরাজগঞ্জের সংকুড়িপাড়া গ্রামের শামসুল ইসলামের ছেলে মো. ফরিদুল ইসলাম (৩৭), সিরাজগঞ্জের একডালা গ্রামের কামালপাশার ছেলে মো. কামরুল ইসলাম (২৮), সিরাজগঞ্জের কুরিপাড়া গ্রামের মৃত নূর হোসেনের ছেলে কোরবান আলী (৪৮)।
পুলিশ সুপার বলেন, সাঁথিয়া উপজেলার নাগডেমরা গ্রামে গত রবিবার রাতে বাথানে ১০টি গরু রেখে সেখানেই কৃষক আব্দুল মোতালেব প্রামাণিক তার ছেলেসহ ঘুমিয়ে পড়েন। রাত দুইটার দিকে অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ১৬ জন ডাকাত সদস্য আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে হাত, পা, মুখ বেঁধে প্রায় ২০ লাখ টাকার দামের ১০টি গরু ও ২টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় পরদিন ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ দিলে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সিরাজগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে ডাকাতির সাথে জড়িত অন্যান্যদের নাম পাওয়া গেছে। গ্রেফতারকৃতদের মামলার মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ এবং উদ্ধারকৃত গরুগুলো ভুক্তিভোগী কৃষককে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এসপি।
গরু ফিরে পেয়ে ভুক্তভোগী কৃষক মোতালেব প্রামাণিক বলেন, গরুগুলোর আয়েই আমার সংসার চলত। অথচ এক রাতেই ডাকাতরা আমার সব গরু নিয়া যাওয়ায় আমি নিঃস্ব হয়ে গেছিলাম। আমার সন্তানদের পড়ালেখার খরচ জোগানো নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু পুলিশের সহযোগিতায় গরুগুলো ফিরে পাওয়ায় আমাদের মাঝে আনন্দ ও স্বস্তি ফিরে এসেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রোকনুজ্জামান সরকার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম, সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম প্রমুখ।
Leave a Reply