নতুন প্রজন্মের মাঝে শহীদ শেখ রাসেলের স্মৃতি ধারণ করে শোককে শক্তিতে পরিণত করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার শপথ নিতে হবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার দিন ছোট্ট শিশু রাসেলকেও খুনীরা হত্যা করে নির্মমতার চুড়ান্ত রূপ দেখিয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের আয়োজনে, শহীদ শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণী ও আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ পাবনা শাখার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স, প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য মুক্তিযোদ্ধা ড. হাফিজা খাতুন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ^াস রাসেল হোসেন, বরেণ্য অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি রেজাউল রহিম লাল।
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরুর পর শহীদ শেখ রাসেলকে নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এ সময় আগত অতিথিরা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি বলেন, শহীদ শেখ রাসেলের মধ্যে শিশু বয়সেই বুদ্ধিমত্তা, মানবিকতার প্রকাশ ঘটেছিলো। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে চিরতরে স্তব্ধ করতেই তারা শেখ রাসেলের মত ছোট্ট শিশুকেও হত্যা করতে দ্বিধা করেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার খুনীদের বিচার করলেও, এই নির্মম হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে অমানিকতার জঘন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে পাবিপ্রবি উপাচার্য ড. হাফিজা খাতুন বলেন, শেখ রাসেল ছোটবেলা থেকেই বন্ধুসুলভ। দেশের প্রধানমন্ত্রীর ছেলে হয়েও খুব সাধারণ, নিরহংকারী জীবন ছিলো তাঁর। পৃথিবীর আর একটি শিশুও যেনো শেখ রাসেলের মতো নির্মমতার শিকার না হয়।
পাবনায় শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের কার্যক্রমের প্রশংসা করে উপাচার্য ড. হাফিজা খাতুন বলেন, শেখ রাসেল হত্যার শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। শহীদ রাসেলে স্মৃতি ধারণ করে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবীত দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি রেজাউল রহিম লাল বলেন, শেখ রাসেলের স্মৃতি নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ অল্প সময়েই পাবনাবাসীর নজর কেড়েছে। এক ঝাঁক তরুণ প্রাণের উদ্যমী প্রয়াসে প্রতিটি কার্যক্রমে শিশু কিশোররা স্মতস্ফূর্ত অংশ নিয়েছে। আগামীতে এই সংগঠনের প্রতিটি উদ্যোগেই পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন তিনি।
পরে আমন্ত্রিত অতিথিরা বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন। রাতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয় জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা।
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ পাবনা জেলা শাখার সভাপতি কামরুজ্জামান রকি জানান, আমাদের জন্মই বিপ্লবের জন্য। এই স্লোগানকে সামনে রেখে সততা, শিক্ষা, ঐক্য ও শৃঙ্খলার পতাকা তলে নতুন প্রজন্মের মধ্যে শিশু শেখ রাসেলের স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮৯ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি “শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ” প্রতিষ্ঠা করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়ায় শিশু কিশোরদের উৎসাহ প্রদান এবং অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টিও এই সংগঠনের উদ্দেশ্য।
এই লক্ষ্যে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ পাবনা শাখার বর্তমান কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কাজ করে চলেছে। আমরা বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে কুইজ, বিতর্ক, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা, ফুটবল টুর্নামেন্টসহ নানা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আগামীতে সমগ্র পাবনা জেলায় কর্মতৎপরতা প্রসারিত করতে প্রচেষ্টা রয়েছে সংগঠনটির।
Leave a Reply