রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৫ অপরাহ্ন

রূপপুর প্রকল্পে ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালান পৌছেছে

নিজস্ব প্রতিনিধি, পাবনামেইল টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩

কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের জন্য ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল বা ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালান ঢাকা থেকে পাবনার প্রকল্প এলাকায় পৌঁছেছে। চালানটি ঢাকা থেকে সড়ক পথে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে নাটোরের বনপাড়া দিয়ে পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া হয়ে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পোঁছায়।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বিষয়টি নিশ্চিত নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে রাশিয়া থেকে দ্বিতীয় চালানের ইউরেনিয়াম বিশেষ একটি বিমানে করে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে। প্রথম চালানের মতোই সর্বোচ্চ নিরাপত্তার বলয়ের মধ্য দিয়ে আমদানি করা পারমাণবিক জ্বালানি সড়ক পথে রূপপুরে আনা হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক বলেন, পর্যায়ক্রমে দেশে আরও পাঁচটি চালান আসবে। প্রাথমিক পর্যায়ে মোট সাতটি চালানে আসা জ্বালানি দিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে এক বছরে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।

এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে এসে পৌঁছায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জ্বালানির প্রথম চালান। পরদিন গত শুক্রবার বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জ্বালানি প্রকল্প এলাকায় নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিকালে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের উপস্থিতিতে তা আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। এর মাধ্যমে পারমাণবিক বিদ্যুৎ ক্লাবে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। প্রথম ইউনিটের নির্মাণ কাজের সব ধরনের যন্ত্রপাতি বসানো শেষ হয়েছে। রাশিয়া প্রতিটি মালামাল ও যন্ত্রপাতি আমাদের এখন বুঝিয়ে দিচ্ছে। এখন কমিশনিং শুরু হবে। সংশ্লিষ্ট সনদ লাভের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবলও প্রস্তুত করে তাদের পদায়ন করা হবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি আমদানি, পরিবহন ও রক্ষণাবেক্ষণসহ সব ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে। কোথায় কোনো ত্রুটি বিচ্চুতি রাখা হয়নি। তাই নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন সুযোগ নেই।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, রূপপুরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে জ্বালানি ব্যবহার হবে, তা চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া তিন বছর বিনামূল্যে সরবরাহ করবে। একবার জ্বালানি লোডের পর প্রথম তিন বছরের জন্য বছরে একবার করে (এক-তৃতীয়াংশ) এবং পরবর্তী সময়ে দেড় বছর পরপর জ্বালানি পরিবর্তন করতে হবে। ফলে জ্বালানির কারণে দেশের অন্যান্য কেন্দ্র যেভাবে বন্ধ থাকে, এখানে ওই ধরনের কোনো সংকট হবে না। নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রথম চালানের জ্বালানির আনুষ্ঠানিকতা শেষ হতে না হতেই দ্বিতীয় চালানের জ্বালানি রাশিয়া পাঠিয়ে দিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২৪ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি, তবে আগামী সেপ্টেম্বরে সঞ্চালন লাইনের কাজ সমাপ্ত হলে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। আর ২০২৫ সালের মাঝামাঝি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিট চালু করা হবে। দুটি ইউনিট চালু হলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। প্রথম ইউনিটের ভৌত এবং অবকাঠামোগত কাজ শেষ হয়ে গেছে ৯০ শতাংশের বেশি। আর দ্বিতীয় ইউনিটের অগ্রগতি ৭০ শতাংশ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..