শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩, ০৬:০০ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
অফিস অটোমেশন সিষ্টেমের উদ্বোধন, কাগজবিহীন অফিস হতে চলেছে পাবিপ্রবি বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে পাবিপ্রবিতে আলোচনা সভা পাবিপ্রবিতে প্রথমবর্ষের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার সকল আয়োজন সম্পন্ন আন-নাসর রমাদান কুইজ ও কর্জে হাসানা কার্যক্রম শুরু পাবনায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নতুন বর্ষবরণ রূপপুর প্রকল্পের গাড়ি চালক সম্রাট হত্যা মামলার মূলহোতা মমিন গ্রেফতার নিখোঁজের দুইদিন পর রূপপুর প্রকল্পের গাড়িচালকের মরদেহ উদ্ধার বাউয়েট এ, “সরকারী খরচে আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রম” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত নিখোঁজের দুইদিন পর যমুনা নদী থেকে কিশোরের বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার চরতারাপুরে বালু মহলে পুলিশের ওপর চেয়ারম্যানের লোকজনের হামলা, সরঞ্জাম জব্দ

বেড়া-সাঁথিযায় আধা পাকা ধান নিয়ে কৃষকের যুদ্ধ,পানিতে নষ্ট হচ্ছে পাট

নিজস্ব প্রতিনিধি, পাবনামেইল টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • প্রকাশিত Monday, 16 May, 2022
Pabnamail24

কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পাবনার সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলার নিচু এলাকার ধানখেত তলিয়ে আছে। এসব জমির ধান পুরোপুরি পাকতে আরও ১৫ দিন থেকে এক মাস সময় লাগতো বলে কৃষকেরা জানিয়েছেন। কিন্তু তলিয়ে থাকলে ধান পুরোপুরি নষ্ট হতে পারে এই আশঙ্কায় কৃষকেরা আধা পাকা ধানই কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন।

কিন্তু শ্রমিক সঙ্কটসহ নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য সেই ধান ঘরে তুলতেও কৃষকদের রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে। সেই সাথে বৃষ্টির পানির জলাবদ্ধতায় দুই উপজেলারই নিচু জমিতে বপন করা পাট ও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে কৃষকদের এই ভোগান্তির মুল কারণ এসকল বিল থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা না থাকায় প্রতিবছরই এই ভোগান্তিতে পরতে হয় বলে কৃষকরা জানিয়েছে।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবার দুই উপজেলায় পাঁচ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ করা হয়েছে। কৃষি কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ৫০ হেক্টর জমির ধান নিমজ্জিত হয়েছে। কিন্তু কৃষকদের দেওয়া তথ্যে উপজেলার করমজা, সোনাতলা, ভেদাগাড়া, ফেচুয়ান, ভিটাপাড়া, পাটগাড়ি, শরিষা, চাকলা,পাচুরিয়া,কৌটোলা, বরশিলাসহ অন্তত ৩০টি গ্রামের চারশ শ থেকে সাড়ে চারশ হেক্টর জমির ধান নিমজ্জিত হয়েছে। এসব নিমজ্জিত জমির ধান আধা পাকা অবস্থাতেই কৃষকেরা বাধ্য হয়ে জমি থেকে কেটে নিয়ে আসছেন। কেটে আনা ধানে স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেক ফলন মিলবে বলে কৃষকেরা আশঙ্কা করছেন।

উপজেলার করমজা মধ্যপাড়া গ্রামের কৃষক গোলজার হোসেন জানান, স্থানীয় ইটকাটা বিলে এবার তিনি সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছিলেন। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এক বিঘা জমির ধান পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে। বাকি জমি সামান্য উঁচুতে থাকলেও সেগুলোও বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই আপাতত তিনি তলিয়ে যাওয়া এক বিঘা জমির ধান কেটে আনতে শুরু করেছেন। কিন্তু দৈনিক ৭০০ টাকা মজুরি দিয়েও ধানকাটা শ্রমিক মিলছে না। এ ছাড়া কেটে আনা ধানের প্রায় অর্ধেকই এখনও কাঁচা রয়েছে।

বেড়া চাকলা গ্রামের কৃষক ওমর মোল্লা জানান, আমি ছোন্দাহ্ বিলের ব্রীজের নিচে তিন বিঘা জমিতে বোরো ধান বুনেছিলাম তা বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। তিনদিন ধরে দেড় বিঘা আধাপাকা ধানই কাটছি। আর দের বিঘার আশা ছেড়ে দিছি। তিনি আরও জানান, ছোন্দাহ্ বিলের পানি বেড় হবার জন্য ব্রীজের নিচে পানি উন্নয়নবোর্ড বড় একটি পাইভ দিয়েছিল অনেক বছর আগে কিন্তু ব্রিজের ডান পাশে পানি উন্নয়নবোর্ডের প্রধান সেচ ক্যনেলে কিছু প্রভাবসালীরা মাছের আবাদের সুবাদে পাইভের মুখ বন্ধ করে দেবার কারণে এই বিলের পানি বেড় হতে না পাড়ায় আমার মত আরও প্রায় তিন শ বিঘা ধান ও চার শ বিঘা পাট নষ্ট হচ্ছে এই বিলে।

সোমবার দুপুরে উপজেলার করমজা ইউনিয়নের কাটিয়াদহ বিলে গিয়ে দেখা যায় প্রচুর ধান পানিতে তলিয়ে আছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই বলে আরেকটু বৃষ্টি হলে পুরো বিলের ধানই তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর ফলে কৃষকেরা ডুবে থাকা ধানের সঙ্গে কিছু ওপরের আধা পাকা ধানও কাটতে শুরু করেছেন। কেটে আনা ধান কৃষকেরা বিলের পাশের রাস্তায় এনে জড়ো করছেন। সেখানেই ধান ছাড়িয়ে রোদে শুকাতে দিচ্ছেন কৃষকেরা। কিন্তু বৃষ্টি নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। বিলের পাশের পরিত্যক্ত রাস্তার বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে অসংখ্য কৃষককে পরিবারের নারী, শিশুসহ সব সদস্যদের নিয়ে আধা পাকা ধান কেটে রোদে শুকাতে দেখা যায়।

বেড়া উপজেলার পাচুরিয়া ধলাই বিলে গিয়ে দেখা যায় একই চিত্র। তবে ধলাই বিল,বড় বিল ও রোঙাই বিলের ধান ও বিলগুলোর চার পাড়ে বপন করা হাটু সমান পাট লাল হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে কৃষকেরা জানান, ধানকাটা শ্রমিকের সংকটে তাঁরা চরম বিপাকে পড়েছেন। শ্রমিকের অভাবে ডুবে থাকা বা বৃষ্টির ঝুঁকিতে থাকা ধান কাটতে পারছেন না। গত বছর পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ শ টাকায় শ্রমিক পাওয়া গেলেও এবার ৭০০ টাকাতেও (দৈনিক মজুরি) শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার গোস্বামী বলেন, ‘নিচু জমিতে কৃষকেরা এবার ১৫ থেকে ২০ দিন দেরিতে ধান বুনেছিলেন। ফলে ধান পাকতেও কিছুটা দেরি হচ্ছে। এ ছাড়া এবার বৃষ্টিও কিছুটা আগে-ভাগেই হানা দিয়েছে। ফলে সব মিলয়ে ৫০ হেক্টরের মতে জমির ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এ অবস্থায় নিমজ্জিত ধান থেকে ২০ ভাগের মতো ফলন কম হতে পারে বলে আমাদের ধারণা।

শেয়ার করুন

বিভাগের আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!