শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন

বেড়ায় নিখোঁজের ছয়দিন পর কঙ্কাল উদ্ধারের ঘটনায় মামলা

নিজস্ব প্রতিনিধি, পাবনামেইল টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩

নিখোঁজের মাত্র ছয়দিন পর কঙ্কাল উদ্ধারের ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) নিহত জিয়াউর রহমানের ছেলে রহিম কাজী বাদি হয়ে বেড়া মডেল থানায় মামলাটি করেন। মামলায় হত্যাকারী হিসেবে সরাসরি কারো নাম উল্লেখ না করা হলেও জুয়ার আসর পরিচালনাকারীরা এতে জড়িত থাকতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার এজহাওে উল্লেখ করা হয়, গত ২১ সেপ্টেম্বর সকালে উপজেলার ঢালারচর ইউনিয়নের কাজীপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমানের মুঠোফোনে একের পর এক ফোন আসতে থাকে। এতে তিনি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ি থেকে ভেকু বিক্রি করা সাড়ে চার লাখ টাকা নিয়ে বেড়া উপজেলার যমুনা নদীর চরে অবস্থিত চরসাফুল্লা গ্রামে জুয়া খেলতে যান। পরে বিকাল চারটার দিকে জুয়ার আসরে পুলিশ অভিযান চালায়। এতে জিয়াউর রহমানসহ জুয়া খেলায় অংশ নেওয়া লোকজন দৌড়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান। এর পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। নিখোঁজ হওয়ার পর ২৩ সেপ্টেম্বর আমিনপুর থানায় জিডি করা হয়। এ ছাড়া জিয়াউরের স্বজনেরা চরসাফুল্লা গ্রামে ব্যাপক খোঁজাখুঁজিও করেন। এ অবস্থায় ২৭ সেপ্টেম্বর জুয়ার আসরের কাছে একটি নালার পাড়ে পরিত্যক্ত জমিতে কঙ্কাল দেখতে পাওয়া যায়। কঙ্কালের পাশে জিয়াউরের পড়নের গেঞ্জি, লুঙ্গি পাওয়া যাওয়ায় কঙ্কালটি তাঁর বলে ধারণা করা হয়। পরে কঙ্কালটির সুরতহাল প্রতিবেদন ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য পাবনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

মামলায় উল্লেখ করা হয় চরসাফুল্লা গ্রামের প্রভাশালী একজনের নেতৃত্বে সেখানে জুয়ার আসর পরিচালিত হত। এই আসর পরিচালনায় সহযোগিতা করা অজ্ঞাত নামে আরো আট-দশজনকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয় ‘ধারণা করা হচ্ছে জুয়ার আসর পরিচালনাকারী উল্লিখিত ব্যক্তিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে জিয়াউর রহমানকে অপহরণ করে খুন করেন এবং গুম করার উদ্দেশ্যে লাশটিকে কঙ্কালে পরিণত করে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য চর এলাকার আগবাগশোয়া গ্রামের একটি নালার পাশে ফেলে রাখে।

কঙ্কাল উদ্ধারের ঘটনায় জিয়াউরের স্বজনেরা বেড়া থানায় মামলা করতে চাইলে তখন বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেছিলেন, কঙ্কালের ডিএনও প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত আপাতত মামলা হবে না। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় চাপে পওে যায় পুলিশ। পুলিশের ধাওয়ায় নিখোঁজ জিয়াউরের বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন জুয়ার আসর থেকে কাউকে আটক করা হয়নি অথচ মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয় চার জনকে আটক করা হয়েছিল। কঙ্কালের ডিএনএ প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত মামলা হবে না বলে জানিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) এ ঘটনায় বেড়া থানা মামলা নেয়।

বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাদিউল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য জোড় চেষ্টা চলছে। আর লাশ থেকে ডিএনও নমুনা রাখা হয়েছে। তবে জিয়াউরের সঙ্গে মেলানোর জন্য উপযোগী স্বজনের ডিএনএ সংগ্রহের বিষয়টি আদালতের এক্তিয়ারভূক্ত। আদালতের নির্দেশ পাওয়া গেলে জিয়াউরের ছেলে বা মেয়ে ডিএনএর নমুনা দেবেন। ডিএনএর প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বোঝা যাবে কঙ্কালটি জিয়াউরের কিনা।

উল্লেখ্য পুলিশ আসার খবর পেয়ে ঘটনার দিন (গত ২১ সেপ্টেম্বর) জুয়ার আসর থেকে অন্যান্য জুয়াড়ির সঙ্গে জিয়াউর রহমান দৌড়ে পালিয়ে যান। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। ২৭ সেপ্টেম্বর জুয়ার আসরের কাছেই পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় একটি কঙ্কাল পাওয়া গেলে সেটিকে জিয়ার বলে দাবি করেন স্বজনেরা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..