ত্যাগী নেতাতাদের অবমূল্যায়ন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের মতামত উপেক্ষা এবং গঠনতন্ত্র অমান্যসহ নানা বিতর্কের মুখে স্থগিত করা হয়েছে পাবনার আমিনপুর থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের কমিটি। দ্রুততম সময়ে কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে শীঘ্রই এ কমিটি পুনরায় গঠিত হবে।
স্বেচ্ছাসেবকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন জানান, গত ৩১ জুলাই পাবনার আমিনপুর থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে জেলা কমিটি। গঠনতন্ত্র অমান্য ও যোগ্যদের বাদ দিয়ে ওই নবগঠিত কমিটি সম্পর্কে অভিযোগ আসে আমাদের কাছে। এরপর ওই রাজনৈতিক এলাকার সংসদ সদস্য, দুই উপজেলা পরিষদের (বেড়া ও সুজানগর) চেয়ারম্যান ও আমিনপুরের সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে বসে এ ব্যাপারে আলাপ হয়। একইভাবে আলাপ হয় জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সাথে।
আলাপ শেষে সদ্য ঘোষিত ওই কমিটি স্থগিত ও দ্রুততম সমন্বয় করে যোগ্যদের অধিক গুরুত্ব দিয়ে গ্রহণযোগ্য একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যার সার্বিক তদারকি করবে কেন্দ্রীয় কমিটি। তিনি আরো জানান, রাজনৈতিক নানা কারণে স্বেচ্ছাসেবকলীগের পাবনা জেলা কমিটির নেতারা বার বার বিতর্কের মুখে পড়েছেন। এ ধরণের বিতর্ক সৃষ্টির কারণগুলো খুঁজে বের করে তাদের সংশোধিত ও সতর্ক হবার মধ্য দিয়ে এ সংগঠনের সুনাম ও ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রাখতে তাগিদ দেয়া হয়েছে। আশা করছি এ ধরণের বিতর্কে জেলার নেতারা আর জড়াবেন না। পাবনা ০২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির বলেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহ্বানে স্থানীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই গিয়েছিলেন। প্রত্যেকেই যার যার জায়গা থেকে সমস্যাগুলো তুলে ধরেছেন। সেগুলো নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে কেন্দ্রের তদারকিতে একটি গ্রহণযোগ্য নতুন কমিটি করা হবে বলে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে যোগ্যরা নেতৃত্বে আসুক এমনটিই প্রত্যাশা। যেনো আগামী নির্বাচনে এই সংগঠন বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আহমেদ শরীফ ডাবলু জানান, কেন্দ্র আমাদের আগেই ডেকেছিলেন। পরে অন্যদের ডেকে আলাপ শেষে বিষয়টি আমাদের জানানো হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা মেনেই কমিটি গঠন হবে। প্রসঙ্গত, গত মাসের ৩১ তারিখে জেলার সুজানগর উপজেলা ও আমিনপুর থানার আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দলটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক।
গঠনতন্ত্রে আহ্বায়ক কমিটি ৩১ সদস্যের বেশি করার নিয়ম না থাকলেও তারা সেটি করেন। নিয়ম না মেনে সুজানগর উপজেলার আমিনপুর থানার ৩৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে পরে সেটি পরিবর্তন করে আবার একই তারিখ দেখিয়ে কমিটির সদস্য ৪৩ জন করা হয়। একই ভাবে করা হয় ওই থানার একাধিক ইউনিয়ন কমিটিও। রানীনগর ইউনিয়ন কমিটিও ঘোষণার পর পছন্দের লোক বাদ পড়ায় তা পরিবর্তন করে সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়। ৭ আগস্টের মধ্যে এমন অনিয়মের কারণ ব্যাখ্যা করার নির্দেশনা দেন কেন্দ্রীয় কমিটি। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে আলোচনায় আসে বিষয়টি।