মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩, ০২:২৩ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
অফিস অটোমেশন সিষ্টেমের উদ্বোধন, কাগজবিহীন অফিস হতে চলেছে পাবিপ্রবি বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে পাবিপ্রবিতে আলোচনা সভা পাবিপ্রবিতে প্রথমবর্ষের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার সকল আয়োজন সম্পন্ন আন-নাসর রমাদান কুইজ ও কর্জে হাসানা কার্যক্রম শুরু পাবনায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নতুন বর্ষবরণ রূপপুর প্রকল্পের গাড়ি চালক সম্রাট হত্যা মামলার মূলহোতা মমিন গ্রেফতার নিখোঁজের দুইদিন পর রূপপুর প্রকল্পের গাড়িচালকের মরদেহ উদ্ধার বাউয়েট এ, “সরকারী খরচে আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রম” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত নিখোঁজের দুইদিন পর যমুনা নদী থেকে কিশোরের বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার চরতারাপুরে বালু মহলে পুলিশের ওপর চেয়ারম্যানের লোকজনের হামলা, সরঞ্জাম জব্দ

বেড়ায় প্রধান শিক্ষক-সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

স্টাফ করেসপনডেন্ট
  • প্রকাশিত Sunday, 11 September, 2022
Pabnamail24

পাবনা বেড়া উপজেলার ফকিরকান্দি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ের নিয়োগ বাণিজ্যর অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রশাসক উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভূক্তভুগি কয়েজন প্রার্থী।
সম্প্রতি বেড়া উপজেলায় দুইটি কলেজ আরও একটি হাইস্কুলে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে ‘বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে অভিভাবক শিক্ষার্থী ও সচেতন মহলের মধ্যে বেড়ার শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বেড়া উপজেলাধীন মাশুমদিয়া ইউনিয়ের অন্তর্গত, ফকিরকান্দি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০২১ সালের ৩১ জুলাই মানবকন্ঠ পত্রিকায় ৩ জন কর্মচারী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে আল-আমিন শেখ সহ আরো বেশ কয়েকজন চাকরী প্রত্যাশী প্রার্থীরা আবেদন পত্র অগ্রণী ব্যাংকের ব্যাংক ড্রাফট কপি সহ জমা দেয়। পরবর্তীতে দুই বার পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ, তখন অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলম শেখ এর বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠে। তার প্রেক্ষিতে উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার প্রশ্ন ফাস ও অর্থ লেনদেনের প্রমাণ পেয়ে পরিক্ষা স্থগিত করেন। তারপর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরিক্ষা স্থগিতের নোটিশ কোন প্রার্থীদেরকে প্রদান করেন না। এমতাবস্থায় হটাৎ করেই কিছুদিন আগে গোপনে রাতের অন্ধকারে সভাপতি শাহজাহান আলী খাঁন ও প্রধান শিক্ষকের মনোনীত দুই প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়েছেন বলে অন্য প্রার্থীদের অভিযোগ।
উক্ত বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক পদে আবেদনকারী আল-আমিন শেখ বলেন, আমি একজন পরিক্ষার্থী থাকা সত্ত্বেও আমি জানতে পারি নাই, কবে বা কখন পরিক্ষা বা নিয়োগ হয়েছে। অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাজাহান খান ও প্রধান শিক্ষক জন প্রতি ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে গোপনে এই নিয়োগ বানিজ্য করেছেন। উক্ত বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচার দাবি জানাচ্ছি।
নৈশপ্রহরী প্রদে আবেদনকারী মো. মমিন জানান, চলতি বছরের জানুয়ারির ২২ তারিখে পরিক্ষার তারিখ ছিল। আবেদনকারীরা সবাই পরিক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছিল। কিন্ত ঐ সময় প্রধান শিক্ষকের প্রশ্ন ফাসের একটি অডিও রেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পরে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করে এতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার উপস্থিত হয়ে পরিক্ষা স্থগিত করে দেন। এর পরও আমার কাছে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দশ লক্ষ টাকা দাবি করলে আমি দিতে রাজি না হওয়ায় আমাকে চাকুরিতে নেয় নি।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বজলুর রহমান জানান, এই নিয়োগের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমাকে মাসখানেক আগে স্কুলে ডাকে এবং একজন শিক্ষকের বেতনের বিষয়ে স্বাক্ষর করতে বলে আমি দুইটি খাতায় সই করি। কিন্তু সভাপতি আরেকটা খাতা দিলে আমি সেখানেও সই করি। পরে আমি জানতে পারি ঐ খাতাটা নিয়োগের খাতা ছিল। আমাকে না জানিয়ে আমার সাথে চিটারি করে সই নিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক সদস্য জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়ার পূর্বেই স্কুলের সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষক পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন দশ লাখ টাকা লাগবে, এক টাকা কম হলেও চাকরি হবে না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির যোগসাজসে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে একজন অফিস সহায়ক এবং একজন নৈশ প্রহরী নেয়া হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক মো.আলম শেখ এর কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘এসব মিথ্যা যেসব প্রার্থীরা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে তারা নিয়োগে আবেদন করতে পারে নাই তারাই এসব বলছে। সব কিছু সঠিক নিয়মেই করেছি। কোন অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য হয়নি।’ প্রধান শিক্ষকের কাছে ইতিপূর্বের প্রশ্নফাসের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি কোন প্রশ্ন ফাস করিনি আমি শুধু একজন প্রার্থীকে বলেছিলাম এই এই প্রশ্ন আসতে পারে।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাজাহান আলী খান বলেন, ‘সব কিছু বিধি মোতাবেক হয়েছে। স্বচ্ছভাবে প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কোন নিয়োগ বাণিজ্য হয়নি।’
বেড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খবির উদ্দিন বলেন, ‘এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বার্হী অফিসার মো. সবুর আলী জানান, এ বিষয়ে আমাকে মুঠোফোনে ডিসি মহোদয় এবং পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহম্মেদ ফিরোজ কবির আমাকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করতে বলেছে। অভিযোগও পেয়েছি দ্রুতই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এব্যাপারে ৬৮, পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহম্মেদ ফিরোজ কবির নিয়োগের অনিয়মের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, যারা আবেদন করেছিল তাদের অনেকেরই পরিক্ষা নেয়নি। এটা তো হতে পারে না। নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিকভাবে হয়নি। আমি ইউএনও মহোদয়নে বিষয়টি তদন্ত করতে বলেছি।

শেয়ার করুন

বিভাগের আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!