পাবনায় ইউনিয়িন পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় প্রতিপক্ষের গুলিতে এক আওয়ামীলীগ নেতা নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে হেমায়েতপুর ইউনিয়নের নাজিরপুর হাটপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শামীম হোসেন (৪০) ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক ও নাজিরপুর হাটপাড়া গ্রামের নূর আলী প্রামাণিকের ছেলে। এ ব্যাপার নিশ্চিত করেছেন পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জুয়েল।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যায় ওই গ্রামে একটি দোকানের পাশে বসে সদ্য পরাজিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মঞ্জুরুল আলম মধু ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক শামীম হোসেন প্রামানিক বসে কথা বলছিল। এ সময় অপর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান অটোরিক্সা প্রতীকের প্রার্থী তরিকুল ইসলাম নিলুর লোকজনের সাথে মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এরই এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষ সমর্থকরা নিলুকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি এসে অতর্কিত ভাবে তার লাইসেন্সকৃত বন্দুক দিয়ে গুলি চালায়। এ সময় শামীম গুলিবিদ্ধ হলে তাৎক্ষনিক স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি আনোয়ারুল আজীম চিনু বলেন, সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে নিলুর সমর্থকরা পরাজয় নিশ্চিত হয়ে জামায়াতের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়। তাদের সমর্থনে জামাতের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বিজয়ী হয়েছে। নির্বাচনী বিষয় নিয়ে আমরা যারা নৌকার নির্বাচন করেছি তারা সন্ধ্যায় মূল্যায়ণ বৈঠক করছিলাম। হঠাৎ নিলু ও তার ছেলে ইমরানের সাথে শিবির কর্মীরা অতর্কিত আমাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় গুলি চালালে শামিম গুলিবিদ্ধ হয়। তাৎক্ষনিক আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করি।
এ ঘটনার পর পরই হাসপাতালে ছুটে যান পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি।
এ সময় তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। আওয়ামীলীগের প্রার্থী পরাজিত হলেও সরকার জিতেছে। বিজয়ের মাসে প্রকাশ্যে ত্যাগী আওয়ামীলীগ কর্মীকে এভাবে হত্যা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করবো যারাই এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত তাদেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি। নির্বাচনের পরদিন থেকেই শামীমকে এরা বিভিন্ন ভাবে হুমকী দিয়ে আসছিল। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সাথে জামায়াতের যোগসাজশে এই হত্যাকান্ড হয়েছে বলেও দাবী তার।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ঘটনার পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তবে যারাই এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের খুজে বের করা হবে। আমাদের লোকজন এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ ডিসেম্বর হেমায়েতপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নির্বাচিত হন এবং নৌকার প্রার্থী মঞ্জুরুল আলম মধু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তরিকুল ইসলাম নিলু পরাজিত হন।
Leave a Reply