পাবনা গণপূর্ত ভবনের অফিস কক্ষে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তারকে মারধরের ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের ২০ ঘণ্টা পর মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও পাবনা গণপূর্ত বিভাগ ওই ঠিকাদারের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করেছে।
লাঞ্ছিত প্রকৌশলীর থানায় দায়েরকৃত অভিযোগের ঘটনার সত্যতা মেলায় মঙ্গলবার (০৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম।
আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মারধরের শিকার গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে সোমবার সন্ধ্যায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা মেলায় মঙ্গলবার অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। মামলা নম্বর ২৫। ‘অভিযুক্ত ঠিকাদার নয়নকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু ঘটনার পর থেকে তিনি আত্মগোপনে আছেন। আশা করছি খুব শিগগির আমরা তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।’
গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘অফিসে ঢুকে সরকারি কর্মকর্তার গায়ে হাত দেয়া সত্যিই দুঃখজনক ঘটনা। আমরা আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কাজ করছি। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ওই ঠিকাদারের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। ’
ঠিকাদার মেসার্স নুর কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মোকছেদুল আলম নয়ন গণপূর্ত বিভাগের বেশ কিছু কাজ দীর্ঘদিন ধরে ঝুলিয়ে রেখেছেন। তাকে বারবার তাগাদা দিলেও তিনি আমলে নেননি। সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) এ বিষয় নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে কথা বলতে আসেন ঠিকাদার নয়ন।
এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলী তার কক্ষে ছিলেন না। উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তারকে তাকে অসমাপ্ত কাজগুলো তুলে দেওয়ার জন্য বললে তিনি উত্তেজিত হয়ে উঠেন। এক পর্যায়ে তিনি অশালীন ভাষা প্রয়োগের এক পর্যায়ের ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে প্রকৌশলী সাত্তারকে কিল ঘুষি ও লাথি মারতে শুরু করেন।
তার চিৎকারে অফিসের লোকজন ছুঁটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। এ সময় অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করতে করতে ঠিকাদার নয়ন অফিস থেকে বের হয়ে যান।
পাবনা গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী দেবাশীষ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘এর আগেও ঠিকাদাররা অস্ত্রের মহড়া দিয়ে শাসিয়েছে। ঠিকাদাররা কাজ নেবেন। কাজ না করলে বললেই যদি আমাদের অপরাধ হয়, তাহলে বলার কিছুই থাকে না। এগুলো বন্ধ হওয়া জরুরি।’
পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, ভুক্তভগেী প্রকৌশলী থানায় অভিযোগ করেছেন। তদন্তে ঘটনার সত্যতা মেলায় তা মামলা হিসেবে নতিভুক্ত করা হয়েছে।
চলতি বছরের ৬ জুন ঠিকাদারি কাজের অজুহাতে আওয়ামীলীগ নেতা এ আর খান মামুন ও যুবলীগ নেতা শেখ লালু তাদের বাহিনী নিয়ে অস্ত্রের মহড়া দেয়। ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তিন মাসের মাথায় আবারও এ ধরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে আতংক আর উৎকণ্ঠা বেড়ে গেছে।
Leave a Reply