জমে উঠেছে পাবনা পৌরসভা নির্বাচন। শিক্ষা সাহিত্য, শিল্প সাস্কুতিক অধ্যুষিত প্রথম শ্রেণির এ পৌরসভায় মেয়র পদে এবার চার জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা পৌরসভার উন্নয়ন, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত এবং পৌরবাসীর দুঃখ-দুর্দশায় পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।
৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে পাবনা পৌরসভার ভোটগ্রহণ। ভোট নিয়ে সব বয়সের মধ্যে যথেষ্ট আগ্রহ দেখা গেছে। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে জমে উঠেছে নির্বাচনি মাঠ। প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাদের সমর্থকেরা। সব মিলিয়ে সরগরম পাবনার তৃণমূলের রাজনীতি।
পাবনা পৌরসভা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কায়ছার মোহাম্মদ জানান, পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৭৪ জন আর সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। পাবনা পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার রয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ২৪৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫৮ হাজার ৪০ জন আর নারী ভোটার ৫৪ হাজার ২০৪ জন।
সরেজমিনে পাবনা পৌর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পৌর এলাকায় এখন নির্বাচনি হওয়া বাইছে। প্রার্থীরা লিফলেট বিতরণ, পোস্টার সাঁটিয়ে, ব্যানার টানিয়ে ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে নির্বাচনি মাঠে নিজেদের প্রার্থী হওয়ার খবর জানাচ্ছেন। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও চলাচ্ছেন জোর প্রচার-প্রচারণা। পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানও জমে উঠেছে নির্বাচনি আলোচনায়।
নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৫ জন হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা যুব লীগের আহবায়ক ও পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-সভাপতি আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনি (নৌকা), বিএনপি মনোনীত জেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও এডওয়ার্ড কলেজের সাবেক ভিপি নূর মোহাম্মদ মাছুম বগা (ধানের শীষ), জাতীয় পাটির প্রার্থী চৌধুরী মোহা: মাহবুবুল হক ((ল্গাল), স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শরিফ উদ্দিন প্রধান (নারিকেল গাছ) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে আবু বক্কর সিদ্দীক (হাত পাখা) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।
পাবনার স্থানীয় রাজনীতিতে মতবিরোধ থাকলেও পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সেই মতবিরোধ এখন আরও তুমুল আকার ধারন করেছে। দলের হাই কমান্ড এবং কেন্দ্রের নির্দেশনা মোতাবেক দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করার জন্য একসঙ্গে কাজ করছেন না বলে দাবী নেতাকর্মীদের। স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে জেলার অধিকাশ নেতারা কাজ করার ফলে অনেকটাই ফুরফুরে মেজাজে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার সমর্থকেরা। অপরদিকে নৌকা মার্কার প্রার্থী আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনিও তার সমর্থকেরা সভা সমাবেশ করে দিচ্ছেন আধুনিক পৌরসভা গড়ার প্রতিশ্রুতি। দিন রাত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছেন সমর্থকরা।
এদিকে, বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে মতবিরোধ থাকলেও পৌর নির্বাচনে সবাই মতবিরোধ ভুলে দলের প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নেমেছেন। তারা তাদের প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পৌরসভার প্রতিটি ঘরে দলীয় প্রতীক ধানের শীষের সালাম পৌঁছে দিচ্ছেন। দলের সব নেতারাও ইতোমধ্যে নির্বাচনি প্রচারণা চালিয়েছেন। তারা দেশে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত মনোনীত প্রার্থী আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনি (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ উদ্দিন প্রধান (নারিকেল গাছ) মধ্যে। এখন পযন্ত পোষ্টার ছেড়া, নিবাচনী অফিস করতে না দেওয়াসহ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাও ঘটেছে। তবে শহরবাসি একটি সুষ্ঠু সংঘাতহীন নির্বাচন চান।
Leave a Reply