শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:২৮ পূর্বাহ্ন

চিকনাই উচ্চ বিদ্যালয়ে সভাপতির বিরুদ্ধে ৩৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

নিজস্ব প্রতিনিধি, পাবনামেইল টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

বিদ্যালয়ের উন্নয়ন করার নামে ১৮ লাখ টাকায় ২ জন কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে এবং ২ জনকে চাকরি দেওয়ার নামে আরও ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের চিকনাই উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুস সোবহান প্রামানিকের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দূর্নীতি ও শিক্ষক-কর্মচারীদের হুমকি ধামকি দিয়ে অতিষ্ঠ করে তুলেছেন প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সাত সদস্য পদত্যাগ করেছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বোর্ডে কমিটি বাতিল করে এডহক কমিটির অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন। অন্যদিকে এক শিক্ষককে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়ায় সভপতির বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।  

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (মাউশি) বরাবর লিখিত অভিযোগে জানা যায়, চিকনাই উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে আব্দুস সোবহান প্রামানিক অযাচিত হস্তক্ষেপ করে নানা অনিয়ম, দূর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টসহ কমিটির অন্য সদস্যদের কোন মতামত না নিয়ে নিজের খেয়ালখুশি মতো প্রভাব বিস্তার করছেন। ১৮/০৯/২০২২ তারিখে তিনি জোরপূর্বক কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে ১১ লাখ ও আয়া পদে ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন। অথচ একটি টাকাও তিনি বিদ্যালয়ের তহবিলে জমা করেননি। অন্যদিকে অফিস সহায়ক ও পরিচ্ছন্নতা কর্মি নিয়োগ দেয়ার কথা বলে ইতোমধ্যে দুইজনের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। যা কোন অবস্থায় বিধি সম্মত নয়। তার এ সকল অনৈতিক ও ঘুষ বাণিজ্যের কারণে ২৯/০৮/২০২৩ ইং তারিখে পরিচালনা কমিটি এক জরুরী সভা আহবান করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিলুফা পারভীন। ওই সভায় ১১ সদস্যের মধ্যে দাতা সদস্য হাবিবুর রহমান, অভিভাবক সদস্য আব্দুল মজিদ, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য লিলা খাতুন, শিক্ষক প্রতিনিধি মোকবুল হোসেন, হাবিবুর রহমান, রাবেয়া খাতুন, সদস্য সচিব নিলুফা পারভীন পদত্যাগ করেন। যা লিখিত ভাবে মাউশিতে অবহিত করা হয়।

শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতির প্রতিবাদ করায় চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর সকালে স্কুলে আসার সময়ে সভাপতি আব্দুস সোবহান প্রামানিক লোকজন সহ আমার পথ আটকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আমি চাটমোহর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছি। জিডি নং ৯৮১, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিলুফা পারভীন বলেন, সভাপতি অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতাসহ তার বিতর্কিত নানা কর্মকান্ডে আমরা শিক্ষক, অভিভাবক ও কর্মচারীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। বিধি মোতাবেক ১১ সদস্যের ৭ জন পদত্যাগ করায় কমিটি বিলুপ্ত করে এডহক কমিটির আবেদন করেছি। তিনি বলেন, নিয়োগ দিয়ে উন্নয়নের নামে প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিলেও সে টাকার কোন কাজ করা বা তহবিলে জমা করেননি। পুরোটাই আত্মসাৎ করেছেন৷ চাকরি দেয়ার নামে আরও দুজনের কাছ থেকে অগ্রীম ২০ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে তিনি জানতে পারেন। সভাপতির অনিয়ম ও দূর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবী করেন তিনি।     

এ বিষয়ে সভাপতি আব্দুস সোবহান প্রামানিকের বক্তব্যের জন্য একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন কেটে দেন ও বন্ধ রাখায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেদুয়ানুল হালিম বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..