পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি নিয়োগের দাবীতে এবার মাঠে নামলেন সদ্য বিদায়ী ভিসিপন্থি বিএনপি জামায়াতপন্থি শিক্ষকরা। এ নিয়ে ভিসি বিরোধীরা ও সাধারণ শিক্ষক শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষের পদ শুন্য থাকায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ হওয়া, শিক্ষার্থীদের ফলাফল আটকে থাকা, নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাশ চালু না হওয়া, সেশনজট বৃদ্ধিসহ একাডেমিক, প্রশাসিক, আর্থিক সঙ্কটসমূহ দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে এ মানববন্ধন আয়োজন করা হয়। পাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে সাবেক ভিসি রোস্তম আলীর ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত শিক্ষকদের এই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান, সহকারী প্রক্টর ফারুক আহমেদ, ডরমিটোরি প্রশাসক ড. রেদোয়ান হোসেন, ড. মো. আমিরুল ইসলামসহ হাতেগোণা কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্য অনুষদের ডিন ড. কামরুজ্জামান বলেন, ‘উপাচার্য না থাকায় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ হয়ে গেছে। আর্থিক সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পরিবহন চলাচল বন্ধ হবার উপক্রম, শিক্ষার্থীদের রেজাল্টও দেওয়া যাচ্ছে না। এক কথায় বহু সঙ্কটে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে এ সঙ্কট সমাধান করতে হবে।’ এ সঙ্কট উত্তরণের জন্য দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাই।’
একাধিক শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আয়োজনের নেপথ্যে থেকেও সরাসরি মানববন্ধনে আসেননি ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন সাইফুল ইসলাম, মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. হাবিবুল্লাহ্, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন খায়রুল আলম প্রমুখ।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এদিকে উপাচার্য রোস্তম আলীর বিরোধী পক্ষের শিক্ষকরা কেউই এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেনি। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারসহ বেশিরভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী এতে অংশগ্রহণ করেনি। এ গ্রুপের একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে সদ্যবিদায়ী ভিসি ও তার অনুসারীদের অনিয়ম-দুর্নীতি বিষয়ে তাদের ক্ষোভের কথা জানা যায়।
উপাচার্য রোস্তম আলী ও তার অনুসারীরা নিয়োগ বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি ও উন্নয়ন প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতি করার জন্যে অনেক আগে মেয়াদ শেষ হলেও উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের প্রস্তাব না পাঠিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল সঙ্কট সৃষ্টি করেছেন। ফলে এ বিষয়ে এখন তাদের মানববন্ধন করা তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়।’
ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান ও বাণিজ্য অনুষদের সাবেক ডিন ড. মুশফিকুর রহমান বলেন, যারা সঙ্কট সৃষ্টি করেছেন, সঙ্কট সমাধানে তাদেরই আবার মানববন্ধন আয়োজন তামাশা বৈ আর কিছু নয়। আর এজন্যেই অধিকাংশ শিক্ষকরা এই কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেননি। সাবেক ভিসির অনুসারী কতিপয় সুবিধাভোগী ও বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকরা কেবল এতে অংশ নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ মার্চ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম রোস্তম আলীর মেয়াদ শেষ হয়। মেয়াদপূর্তির আগেই নিয়োগবাণিজ্যসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মাথায় তিনি চুপিসারে ক্যাম্পাস ছাড়েন। বর্তমানে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের পদ শূন্য থাকায় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ হয়ে গেছে এবং শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট আটকে যাওয়ায় সেশনজট প্রবল আকার ধারণ করছে।
পাবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম বলেন, ‘উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও রেজিষ্ট্রার না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ধরনের অচলাবস্থা চলছে। শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী সবার বেতন বন্ধ রয়েছে। বলতে গেলে সব কর্মকান্ড বন্ধ।
Leave a Reply