পাবনার ঈশ্বরদীর একটি বিদ্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুচ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে হিন্দি গানের সঙ্গে ছাত্রীরা নাচ করায় প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ঈশ্বরদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আকতার স্বাক্ষরিত পত্রে সলিমপুর ইউনিয়নের মানিকনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমানকে এই নোটিশ পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে মোবাইলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আকতার। এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার দপ্তর থেকে রোববার দুপুরে পাঠানো হয়েছে নোটিশটি। নোটিশের জবাব পত্রপ্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কারণ দর্শানোর চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘গত ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২ তম জন্মদিনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা হিন্দি গানের সঙ্গে নৃত্য প্রদর্শন করে, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এহেন ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত তা পত্রপ্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশনাক্রমে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
এদিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমাদের অজ্ঞাতসারে ছাত্রীরা ভুলবশত হিন্দি ও কাঁচা বাদাম গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছে। যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। আমি সেখানে উপস্থিত থাকলে এমন হতো না। তবে তিনি বিষয়টির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘ছাত্রীরাও বিষয়টি নিয়ে কিন্তু বেশ ভয়ে আছে।
সুশীল সমাজ বলছে, ঐ ভিডিও তে দেখা যায়, নাচের জন্য একজন স্যার শিক্ষার্থীদের মঞ্চে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। যেখানে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতিও অংশগ্রহন করে বড় অংকের টাকা পুরষ্কার হিসেবে দিচ্ছেন। এমন নাচের জন্য ৭ দিন আগে থেকে ছাত্রীদের প্রাকটিস করানো হয়েছে বলে জানিয়য়েছেন বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত একাধিক শিক্ষার্থী । তাহলে এমন ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত নয়, বরং পরিকল্পনা করে করা হয়েছে এবং এখন ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে উপজেলা সলিমপুরের ‘মানিকনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘কাচা বাদাম’ ও ‘বিদেশি-হিন্দি গানের’ সঙ্গে নেচে-গেয়ে জন্মদিন পালন করে। এ সময় বিদ্যালয়ের নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ করা হলে তা দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিষয়টি ভাইরাল হওয়ায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমালোচনার মধ্যে পড়ে। অনেকে ফেসবুকে নানা ধরনের মন্তব্য করেন। পরবর্তীতে স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই পেজটি ডিলিট করে দেয়। এসব আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন।
প্রধান শিক্ষকের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শিক্ষা অফিসার বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধানকে মনে রাখতে হবে এটি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিশুরা অনুষ্ঠানে আনন্দ হই-হুল্লোড় করবে-এটা ঠিক। কিন্তু অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়-এমন কিছুই শিশুদেরকে করানো যাবে না।
Leave a Reply