শুরু থেকেই অবৈধ র্যাফেল ড্র বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষে কথা বলা শুরু করে পাবনামেইল টোয়েন্টিফোর ডটকম। দীর্ঘ জল্পনা কল্পনার পর অবশেষে তা বন্ধ করলো ডিবি পুলিশ। পাবনামেইল টোয়েন্টিফোর ডটকমের সংবাদ কপি করে তা বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ পায়। বিষয়টি নিয়ে সারা জেলায় চলে কানাঘুষা।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের দোহাই দিয়ে ঈশ্বরদী স্টেডিয়ামের উন্নয়নের কথা বলে মেলার নামে অবৈধ লটারি, র্যাফেল ড্র এর নামে জুয়া ও হাউজী খেলা শুরু করেন পৌর মেয়র ইছাহাক আলী মালীথা ও তার সহযোগীরা। স্থানীয় প্রশাসনসহ সকল মহলে দৈনিক হারে ম্যানেজ করেই চলতো মেলাটি দাবী মেলা কতৃপক্ষের।
বিষয়টি নিয়ে পাবনামেইল টোয়েন্টিফোর ডটকমে কয়েকটি ভিডিও ষ্টোরীসহ একাধিক সংবাদ প্রকাশ করে। বিষয়টি পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খানসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। পরে শনিবার (১৯ মার্চ) রাতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে মেলার হাউজী খেলা ও র্যাফেল ড্রয়ের প্যান্ডেল উচ্ছেদ করা হয়।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, ঈশ্বরদী পৌর শিল্প ও বাণিজ্য মেলায় জেলা পুলিশের দেয়া শর্ত ভঙ্গ করে লটারির নামে জুয়া, হাউজী ও র্যাফেল ড্র চালু করে মেলা কতৃপক্ষ। পুরস্কারের লোভে একাধিক লটারির টিকেট কেনা নিয়ে দরিদ্র শ্রেনীর লোকদের মধ্যে সাংসারিক অশান্তির পাশাপাশি এলাকায় চুরি, ছিনতাই বৃদ্ধির আশংকা থাকায় পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মেলায় অভিযান পরিচালনা করে আয়াজনকারী কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ এসব বন্ধের নির্দেশও দেন বলে জানান তিনি।
এছাড়া রবিবার (২০ মার্চ) থেকে মেলায় কোনপ্রকার লটারি বা র্যাফেল ড্র করা হবে না মর্মে সতর্ক করা হয়েছে। অন্যথায় মেলার অনুমতি বাতিল করা হবে বলেও জানান মাসুদ আলম।
উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ থেকে ঈশ্বরদী স্টেডিয়ামে মেলা শুরু হয়। শিল্প ও বাণিজ্য মেলার নাম ব্যবহার করলেও শিল্প ও বাণিজ্য সংক্রান্ত তেমন দোকান বা বেচাকেনা চোখে পড়েনি। সরেজমিন দেখা যায়, স্টেডিয়ামের বাহিরে সাজানো হয়েছে জাকজমপূর্ণভাবেই। রয়েছে মেলার সুবিশাল গেট। ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা থাকলেও মেলার ভেতরে ফাঁকা, দোকান পাট বিহীন। তবে র্যাফেল ড্রয়ের জন্য করা হয়েছে মঞ্চ। যেখানে ঝুলছে দৈনিক স্বপ্নপুরী র্যাফেল ড্র এর ব্যানার।
মেলা সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিদিন অর্ধকোটি টাকার টিকিট বিক্রি হয়। দিনব্যাপী দুইশত ইজিবাইক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় মাইকিং করে পুরো লালপুর, ঈশ্বরদী ও পাবনা সদর উপজেলার গ্রাম-গঞ্জে র্যাফেল ড্রয়ের টিকিট বিক্রি করা হয়। প্রচারণায় মানুষকে লোভনীয় পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে টিকেট কিনতে আকৃষ্ট করা হয়।
দিনব্যাপী প্রচারণা শেষে রাতেই মেলার মূল মঞ্চে চলে র্যাফেল ড্র। সরাসরি দেখানো হয় স্থানীয় কেবল চ্যানেলেও। মাত্র ২০ টাকায় গাড়ি, মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর, অটোরিকশা, গরু, স্বর্ণালংকারসহ নানা লোভনীয় পণ্যের প্রচারণায় চলছে টিকিট বিক্রি। লোভে পড়ে দরিদ্র ও সাধারণ মানুষ প্রতারিত হলেও আয়োজকদের দাবি ছিল, প্রশাসনের অনুমতিতে সবাইকে ম্যানেজ করেই চলছে মেলা।
মেলাটির জুয়া বন্ধ হওয়ায় খুশি গরীব ও অসহায়রা।
Leave a Reply