পাবনার ঈশ্বরদীতে জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ঈশ্বরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। রোববার সকালে শহরের হাসপাতাল রোডের বেসরকারি হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। মৃত নবজাতকের মা ইসরাত জাহান সিন্তার শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।
ইসরাত জাহানের বাবা ইমারত আলী ও পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শুরু থেকেই একবার নরমাল ডেলিভারি আরেকবার সিজারিয়ান অপারেশন করার কথা বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেন জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিকিৎসক নাফিসা কবির। তাঁর সিদ্ধান্তহীনতা আর ভুল চিকিৎসার কারণেই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে মৃত সন্তান প্রসবের পর ইসরাত জাহান সিন্তার অবস্থাও ভালো নয় বলে দাবী পরিবারের।
তারা আরো জানান, মেয়ে অন্ত:সত্ত্বা হওয়ার পর থেকে নাফিসা কবিরের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিল। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সন্তান প্রসবের দিন ক্ষণ চিকিৎসকই নির্ধারন করেন। তাঁরই পরামর্শে রোগীকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে ভর্তির পর থেকে চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা প্রদানে চরম অবহেলা করায় ক্রমেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
এক পর্যায়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে অন্য হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। তাৎক্ষণিক ভাবে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করার পর রোগীর অবস্থার আরও অবনতি হয়। পরে সেখান থেকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত রোগীর শরীরে ১৮ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। সন্তান মারা গেছে, এখন মায়ের জীবনও থাকবে কিনা আমরা বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিকিৎসক নাফিসা কবির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তাদের চিকিৎসা প্রদানে কোনো অবহেলা ছিল না। রোগীর শারীরিক অবস্থা দুর্বল হওয়ায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় ও নবজাতক মারা যায়। ওই পরিস্থিতিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে রাজশাহী নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: রফিকুল ইসলাম জানান, নবজাতকের মৃত্যুর ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।