জমজমাট ঈদের বাজার। সে বাজারে ছোট শিশুদের নানা রঙের বাহারি পোশাকের পাশাপাশি রয়েছে বড়দের পোশাকও। তবে, আকর্ষণীয় এসব পোশাক মিলেছে মাত্র ১০ টাকায়। স্বল্প আয়ের নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য পাবনার সুজানগরে এমন ব্যতিক্রমী ঈদ বাজারের আয়োজন হয়ে গেলো পাবনার সুজানগরে। বৃহস্পতিবার উপজেলার কাশেম প্লাজায় এ আয়োজন করে মানবতার সেবায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আবুল কাশেম ফাউন্ডেশন।
ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সানজিদা ইয়াসমিন টুম্পা জানান, করোনার দুবছরের ধকল কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সংগ্রামে মানুষ। নিম্ন আয়ের মানুষেরা অর্থনৈতিক ভাবে প্রচন্ড ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কোনমতে দিনপথ চললেও বাড়তি পোশাক কেনার মত অবস্থায় অনেকেই নেই। সেসব দরিদ্র মানুষের মাঝে ঈদের নতুন পোশাকের আনন্দ ছড়িয়ে দিতেই দশ টাকার ঈদের বাজার।
সানজিদা ইয়াসমিন টুম্পা জানান, দশ টাকার ঈদের বাজারে ছোটদের শাট, প্যান্ট, পাঞ্জাবী, মেয়েদের বাহারি পোশাকের পাশাপাশি বিক্রি হয়েছে বড়দের পোশাকও। এ পোশাক কোন দান বা ভিক্ষা নয়। নিম্ন আয়ের মানুষ যাতে অপমানিত বোধ না করেন তাই প্রতীকী মূল্যে পোশাকের বাজার গড়েছেন তারা।
বৃহঃস্পতিবার সুজানগর উপজেলার চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান রহমান শাহীন এই ঈদ বাজারের উদ্ধোধন করেন। পরে, পৌর এলাকার চরভবানীপুর, কাচারীপাড়া, হাসপতাল পাড়া এলাকার সহস্রাধিক স্বল্প আয়ের মানুষ ১০ টাকা দিয়ে তাদের পছন্দমত ঈদের জামা কাপড় ক্রয় করেন। ১০ টাকা মূল্যের পোশাক পেয়ে দারুণ খুশি তারা।
সরেজমিনে ১০ টাকার ঈদ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সুজানগর পৌর এলাকার চরভবানীপুর গ্রামের ১০ বছরের শিশু সুমাইয়া বাবা ইদ্রিস মোল্লার সাথে এসেছে বাজারে। কিছুক্ষণ দেখে নিজের পছন্দে বেছে নেয় একটি টুকটুকে লাল রঙের ফ্রক। মেয়ের পছন্দের জামা কিনে দিতে পেরে খুশিতে কেঁদে ফেলেন ইদ্রিস।
দিন মজুর ইদ্রিস আলী বলেন, বাজারে জিনিস পত্রের জিরাম দাম তাতি ঠিকমত বাজার সদাই করতি পারিনে। ছাওয়াল পালেক একখেন নতুন কাপড় বছরে দিতি পারবো না এই চিন্তাত মনটা খুব আনচান করতিছিলে। আইজকা দশ ট্যাহা দিয়ে মিয়েডাক নতুন জামা কিনি দিছি। আমার নিজের জন্যি পাঞ্জাবি ও বউয়ের শাড়িও লিছি। এখন খুব আনন্দ হচ্ছে।
সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও আবুল কাশেম ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, মেহনতি ও সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে এ আয়োজন। যাদের বাজারে গিয়ে ঈদের কেনাকাটা করার সামর্থ্য নেই এমন মানুষের জন্য এই ১০ টাকার বাজার। মূলত আমরা ত্রাণ হিসেবে নয়, বরং বিক্রেতা হিসেবে এই ১০ টাকার বিনিময়ে পণ্য বিক্রি করছি। যাতে করে সামান্য হলেও কিছু মানুষকে আমরা ঈদের আনন্দ পৌঁছে দিতে পারি।
তিনি আরো জানান , কেবল ঈদের বাজারই নয় সব সময়ই সমাজের অসহায় গরীব ও দুস্থ মানুষকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা করে আসছে আবুল কাশেম ফাউণ্ডেশন। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সুজানগর উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে চলবে ১০ টাকায় ঈদ বাজারের কার্যক্রম।
Leave a Reply