সাঁথিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার দেবনাথের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চরিত্রহীনতার অভিযোগে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেছে। ২০১৫ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি নিয়োগ পান। তার নিয়োগ নিয়েও জনমনে প্রশ্ন আছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কল্যাণ ট্রাস্ট্রের আড়াই লাখ টাকাসহ বিভিন্নখাতের বিপুল অর্থ আত্মসাত অভিযোগসহ নিজে প্রধান শিক্ষক হয়েও তিনি শিক্ষার্থীদেরকে চাপ সৃষ্টি করে তার কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন। প্রতিবছর একাধিকবার তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্তি অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। শিক্ষার্থীরা প্রতিবছরই তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, মানববন্ধন করে ইউএন’র কাছে প্রতিকার চায়। মাঝেমধ্যে তদন্তও হয়। কমিটি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে বোর্ড ও অধিদপ্তরে পত্র পাঠায়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে তার বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক পদক্ষেপই নেয়া হয় না। এটি একটি জাতীয়করণকৃত স্কুল হলেও বিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারে একটা সাইনবোডর্ (নামফলক) পর্যন্ত লেখা নেই। অপরদিকে ২০১২ সালে বিদ্যালয়ের প্রাচীর ভেঙে ফেলার পর আর তা মেরামত করা হয়নি। এক সময়ের দৃষ্টিনন্দন বিদ্যালয়টির সম্মুখদিকে তাকালে এখন মনে হয় এ যেন কোন ময়লার ভাগাড়।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রীর সাক্ষাৎকারের একটি ভিডিও এই প্রতিবেদকের কাছে আছে। গত ১৭ মে মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে ইউএনও বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরদিন বুধবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদেরকে হেড মাস্টারের পক্ষ নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের শাসিয়ে গেছেন বলে শিক্ষার্থীরা জানায়। এদিকে ১৯ মে বৃহস্পতিববার বেলা ১১ টায় বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা স্কুলটির প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কররেছেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানায়, হেড স্যারের কাছে প্রাইভেট না পড়লে খারাপ আচরণ করে, ভয়ভীতি দেখায়। শিক্ষাথীরা তার অপসারণ, পদচ্যুতির দাবি জানায়।বিদ্যালয়টির কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রধান শিক্ষক কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এককভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে মাত্রাতিরিক্ত টাকা আদায় করে আত্মসাত করছেন। তারা জানান, গত ২০১৮ সালে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটি তাকে পদচ্যুত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ বরাবর পত্র দিয়েছিল।কিন্তু অদৃশ্যকারণে তার বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। ওই বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক হাফিজুল কবীর জানান, আমি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কল্যাণ ট্রাস্টের ফান্ডে আড়াই লাখ টাকা রেখে এসেছিলাম। আমি চলে আসার পর আর কোন শিক্ষার্থীকে এ খাত থেকে সুবিধা দেয়া হয়নি।বিদ্যালয়টির একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়,এ বিপুল পরিমাণ টাকা তিনি অত্মসাত করেছেন।
প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার দেবনাথের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। স্কুলটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম জামাল অহমেদ জানান, তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply