স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এজেন্ট বের করে দেয়ার অভিযোগ, প্রকাশ্যে ভোট দিতে বাধ্য করাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগের মধ্য দিয়ে পাবনার বেড়া পৌরসভা নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। ইভিএম পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আসিফ শামস রঞ্জন। সংঘাতের আশংকা থাকলেও শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়েছে নির্বাচন।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, বেড়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট আসিফ শামস রঞ্জন বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি তার আপন চাচা বর্তমান মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল বাতেনকে ১৮ হাজার ২২৩ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন। জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটানিং কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বেড়া পৌরসভার মোট ১৮ কেন্দ্রের ফলাফল অনুযায়ী আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আসিফ শামস রঞ্জন পেয়েছেন ২১ হাজার ৮৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বর্তমান মেয়র আব্দুল বাতেন নারিকেল গাছ প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৬৬০ ভোট। এ ছাড়া আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এএইচএম ফজলুর রহমান মাসুদ।
তিনি রেল ইঞ্জিন প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৭৯ ভোট। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী কেএম আব্দুল্লাহ জগ প্রতীকে পেয়েছেন ৮১৭ ভোট এবং শামসুল হক টুকুর ভাতিজি এসএম সাদিয়া আলম মোবাইল ফোন প্রতীকে পেয়েছেন ২২৫ ভোট।
এদিকে বেড়া পৌরসভার নির্বাচন নিয়ে নানা শঙ্কা থাকলেও নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। ভোটের প্রচার চলাকালে নানা অপ্রীতিকর ঘটনার কারণে এই নির্বাচনের দিকে নজর ছিল সবার। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছিলেন স্থানীয় সাংসদ শামসুল হকের ছেলেসহ তিনজন স্বজন। সাংসদ শামসুল হকের ছেলে আসিফ শামস ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী।
আসিফ শামসের প্রতিপক্ষের প্রার্থীরা তাঁর বিরুদ্ধে হামলা, ভয়ভীতি দেখানোসহ নানা অভিযোগ করে আসছিলেন। শামসুল হকের বিরুদ্ধেও ছেলের পক্ষ নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করার ব্যাপারে অভিযোগ ওঠে। তাই এই নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ছিল ব্যাপক প্রস্তুতি। অনেকেই নির্বাচনে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার শঙ্কায় ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।
তবে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এ এইচ এম ফজলুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল বাতেন, কে এম আব্দুল্লাহ ভোটকেন্দ্র থেকে তাঁদের এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেন। এ ছাড়া বাহিরাগত সন্ত্রাসীদের উপস্থিতিতে তাদের কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার ব্যাপারে ভয়ভীতি দেখানো হয় বলেও তাঁরা অভিযোগ করেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আসিফ শামসের লোকজন এসব কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত বলে তাঁরা জানান। অনিয়মের অভিযোগ তুলে এইচ এম ফজলুর রহমান মাসুদ বেলা দেড়টায় ভোট বাতিল ও পুণরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়ে রিটানিং অফিসার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দেন।
তবে আওয়ামীলীগ প্রার্থী আসিফ শামস এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘যাঁরা অভিযোগ করছেন তাঁরা তো ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার মতো এজেন্টই খুঁজে পাননি। এই ব্যর্থতা ঢাকার জন্য গতানুগতিক ও মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছেন।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কোনোরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ছাড়াই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ আমরা সবাই আন্তরিকভাবে সচেষ্ট ছিলাম।
Leave a Reply