পাবনায় অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রসহ নিষিদ্ধ চরমপন্থি দল সর্বহারা পার্টির ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা সম্প্রতি পাবনার একদন্ত এলাকার আত্মসমর্পণকারী সর্বহারা নেতা মূসা খাঁ হত্যায় জড়িত ছিলো। হত্যাকান্ডের সূত্র ধরে, পুলিশ আতাইকুলা থানার ফরাতপুর নতুন পাড়ায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো চাটমোহর থানার কদমতলী গ্রামের আব্দুল হাই ওরফে সামাদের ছেলে সাইফুল ইসলাম সিরাজুল ওরফে শুটার সিরাজ (২৫), আটঘরিয়া থানার নগর চাচকিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের নায়েব আলীর ছেলে একরাম হোসেন (২৫) , রাজবাড়ী জেলার চরভরাট গ্রামের আজিজুল প্রামানিকের ছেলে জালাল প্রামাণিক ওরফে জাকির (২৮), আমিনপুর থানার চর দূর্গাপুর গ্রামের কোরবান ব্যপারীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৫), আতাইকুলা থানার ফরাতপুর নতুনপাড়া এলাকার গফুর প্রামানিকের ছেলে নাহিদুল ইসলাম শাকিল (১৯)।
গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, গত ২৬ সেপ্টেম্বর আটঘরিয়া থানার একদন্ত অলির মোড়ে আত্ম সমর্পণকারী সর্বহারা তেথা মূসাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় তারা চরমপন্থি দলের নামে শ্লোগান দিয়ে পালিয়ে যায়। হত্যাকান্ডের তদন্তের সূত্র ধরে পুলিশ আসামিদের চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়। রবিবার ভোর রাতে ফরাতপুর এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
মাসুদ আলম আরো জানান, সর্বহারা সদস্যরা অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সশস্ত্র অবস্থায় ছিলো। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা গুলিবর্ষণের চেষ্টা করে। পুলিশের কৌশলে তারা ধরা পড়ে যায়। এ সময় তাদের কাছ থেকে, একটি ৭.৬৫ পিস্তল, ম্যাগাজিন ও ১ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ১ টি ওয়ান শুটার গান, ১টি বিদেশী সাব মেশিন কার্বাইন, সাব মেশিন কার্বাইনের ২টি ম্যাগাজিন, ১৫ রাউন্ড কার্তুজ, ১ টি শর্টগান ও ৩২ রাউন্ড ১২ বোরের তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি জানান, গ্রেফতারকৃতরা নিষিদ্ধ চরমপন্থি দল পূর্ব বাংলা সর্বহারা মাওবাদী বলশেভিক পূণর্গঠন আন্দোলন (পিবিএসপি-এমবিআর) এর সশস্ত্র ও প্রশিক্ষিত সদস্য। এরা পাবনা ও রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন দূর্গম এলাকায় সংগঠিত হবার চেষ্টা করছে। এই দলের সদস্যরা সাবেক সর্বহারা সদস্য ভাড়ারার আমিরুল , সাদুল্লাপুরের বিল্লাল মিশৌরী, ঢালারচরের আক্কাস ও সর্বশেষ একদন্তের মূসা খাঁকে হত্যা করে। নিষিদ্ধ চরমপন্থি দলের পক্ষ ত্যাগ করে আত্মসমর্পণ করায় তাদের আদর্শচ্যুত ও পুলিশের দালাল অভিহিত করে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তারা।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চরমপন্থিরা তৎপরতা শুরু করেছে। তাদের অর্থ ও অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। অচিরেই এর সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।
Leave a Reply