পাবনায় কৃষক আব্দুস সালাম হত্যা মামলায় ২১ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। সোমবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (দ্বিতীয় আদালত) আদালতের বিচারক ইশরাত জাহান মুন্নী এ আদেশ দেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলো: সদর উপজেলার ভাদুরীডাঙ্গী গ্রামের সোবাহান মোল্লার ছেলে শাহজাহান মোল্লা, আব্দুল বাছেদ শেখের ছেলে মিনহাজ, শাকের মোল্লার তিন ছেলে ছেলে নবী শেখ, সুলতান মাহমুদ পক্ষী ও মোক্তার, মৃত ছোবা শেখের ছেলে বাছেদ শেখ, ইনাই খাঁর ছেলে আইয়ুব খাঁ, আমির মোল্লার ছেলে আসলাম, গফুর মোল্লার ছেলে লতিফ মোল্লা, রোস্তম মোল্লার ছেলে ছোবাই মোল্লা, বাহাই প্রামাণিকের ছেলে কালাম, আকুল মোল্লার ছেলে মহির মোল্লা, হাচেন মোল্লার ছেলে মোহাম্মদ আলী মোল্লা ও রেজাউল মোল্লা, গফুর মোল্লার ছেলে বাবু মোল্লা, সুজানগর উপজেলার চর ভবানীপুর গ্রামের করিম মোল্লার দুই ছেলে ছেলে মোকছেদ মোল্লা ও বারেক মোল্লা, মৃত বশির মোল্লার ছেলে করিম মোল্লা, ভবানীপুর কাচারী মাঠ সংলগ্ন আব্দুল কুদ্দুছের ছেলে খোকন, মানিকদিয়ার গ্রামের হবিবুরের ছেলে রফিক এবং সদর উপজেলার কোলচুরি গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে বাবলু।
সাজাপ্রাপ্ত ২১ জনের মধ্যে বারেক, মিনহাজ, বাবলু, বাছেদ শেখ, লতিফ মোল্লা, ছোবাই পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আর বাকি ১৫ আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ৭ নভেম্বর চরতারাপুর গ্রামের আব্দুস সালাম কৃষি জমিতে কাজ করছিলেন। পূর্ব শত্রুতার জেরে এ সময় আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে ঘিরে ধরে। সালাম দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে পেছন থেকে গুলি করা হয়। এসময় সালাম মাটিতে পড়ে গেলে তাকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় ২৪ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন তার ভাই জব্বার। এক বছর পরে ১৯৯৯ সালের ১ আগস্ট ২৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। মামলা চলাকালীন সময়ে ৩ জন আসামি মারা যায়। দীর্ঘ সাক্ষী ও শুনানি শেষে মামলার রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সনৎ কুমার সরকার এবং রাষ্ট্রপক্ষ পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলি (অতিরিক্ত পিপি) অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী।
অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী বলেন, পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যাকান্ডটি ঘটেছে। সাক্ষ্য ও তদন্তে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আদালত তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিয়েছেন। আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট।
তবে, মামলায় ন্যায় বিচার হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সনৎ কুমার সরকার। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণরুপে ব্যর্থ হয়েছে। তারপরেও এই রায় দেওয়া হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
Leave a Reply