পাবনায় পৌর আওয়ামীলীগ নেতা সাইদার মালিথা হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি হেমায়েতপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথাসহ ২৩ আসামীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। সোমবার সকালে পাবনা জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক ইশরাত জাহান মুন্নী এ আদেশ দেন।
পাবনার সরকারী কৌশুলী আব্দুস সামাদ খান রতন জানান, আওয়ামীলীগ নেতা সাইদার রহমান মালিথাকে গত ০৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশ্যে চরবাঙ্গাবাড়িয়া বাঁধের পাশে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। আলোচিত এ হত্যাকান্ডের ৭২ ঘন্টার মধ্যেই পুলিশ ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছয় আসামিকে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে। তারা ১৬৪ ধারায় আদালতে দেয়া জবানবন্দীতে হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা হিসেবে হেমায়েতপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহসভাপতি আলাউদ্দিন মালিথার নাম জানায়। নিহতের পরিবারও এ ঘটনায় আলাউদ্দিন সহ ২০ জনকে আসামি করে মামলা করে। পুলিশী তদন্তে সম্পৃক্ততা পেয়ে আরো ৪ জনকে এ মামলায় আসামি করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া ছয় আসামী ছাড়া অপর আসামিরা উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনা দেন। সোমবার পূর্বে গ্রেফতার হওয়া আসামিদের সাথে প্রধান আসামি আলাউদ্দিন মালিথাসহ মোট ২৩ আসামি আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। বিজ্ঞ আদালত তাদের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে, আসলাম নামে মামলার অপর এক আসামি পলাতক রয়েছে।
সরকারী কৌশুলী আরো জনান, এ হত্যাকান্ডটি জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ও ব্যবসায়িক লেনদেনের ৩০ লাখ টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বে ঘটেছে বলে গ্রেফতারকৃত আসামিরা আদালতকে জানিয়েছে। এতে মূল পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা হিসেবে আলাউদ্দিন মালিথার নামও প্রকাশ করেছে তারা। সুষ্ঠু তদন্তের জন্য কারাগারে পাঠানো আলাউদ্দিন মালিথাসহ আসামিদের আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
এদিকে, আলাউদ্দিন মালিথাসহ সকল আসামির জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহত আওয়ামীলীগ নেতা সাইদার রহমান মালিথার পরিবার। একই সাথে আলোচিত এ হত্যাকান্ডের দ্রুত বিচারও দাবী করেছেন তারা।
নিহতের স্ত্রী দিলরুবা জাহান বলেন, আলাউদ্দিন চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন আমাদের শরিকানা জমি দখল করে ছিলেন। আমার স্বামী সাইদার কিছুদিন আগে সে জমিগুলো দখলমুক্ত করেন। এ কারণে আলাউদ্দিনের পরিকল্পনায় সাইদারকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া আসামিরা ঘটনার সম্পূর্ণ বিবরণ দিয়ে স্বীকোরোক্তি দিয়েছে। হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তল ও ছুরি উদ্ধার হয়েছে। আমি হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
গত ০৯ সেপ্টেম্বর জুম্মার নামাজের কয়েক মিনিট আগে সদর উপজেলার চর বাঙ্গাবাড়িয়া নজুর মোড়ের চায়ের দোকানে সাইদার রহমানকে গুলি করে হত্যা করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ।
Leave a Reply