পাবনা পৌরসভার নিষেধাজ্ঞাকে বৃধাংগুলি দেখিয়ে পাবনা শহরের পাথরতলায় শ্রী শ্রী অনুকুল চন্দ্রের পাকুটিয়া গ্রæপের আস্তানা হিসেবে পরিচিত সৎসঙ্গের নকশা বর্হিভুত বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ অব্যাহত রেখেছে সুবিধাবাদী চক্র। এতে এলাকার মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর পাবনা শহরের পাথরতলায় সৎসঙ্গ বাংলাদেশ’র বিধিবর্হিভূত ভবন নির্মান কাজ বন্ধ করে দেয় পাবনা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, শ্রী শ্রী ঠাকুর অনূকূল চন্দ্রের অনুসারিদের পাকুটিয়া গ্রæপের সংগঠন হিসেবে পরিচিত সৎসঙ্গ বাংলাদেশ পাবনা শহরের পাথরতলা মহল্লার আবাসিক এলাকায় ঠাকুর ভক্তদের জন্য আশ্রম নির্মানে জমি ক্রয় করে দুইটি ভবন নির্মান করে আশ্রম বা সৎসঙ্গ বাংলাদেশের কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। পাবনার সর্বস্তরের মানুষসহ এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় আশ্রমের কার্যক্রম সুষ্ট ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়ে আসছিল।
এরই এক পর্যায় সৎসঙ্গ বাংলাদেশ নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ঐ স্থানে বহুতল নতুন ভবন নির্মান কাজ শুরু করে। এ সময় সৎসঙ্গ বাংলাদেশের কতিপয় নেতা স্বৈরাতান্ত্রিকভাবে স্থানীয় বাসিন্দাদের মতামতকে অবজ্ঞা করে বিধিবর্হিভূত ভবন নির্মান কাজ শুরু করায় মহল্লাবাসি ক্ষুব্ধ হয়।
ক্ষুব্ধ মহল্লাবাসি বাধ্য হয়ে এলাকার পরিবেশ ও শান্তি রক্ষা এবং বিধিবর্হিভূত ভবন নির্মান কাজ বন্ধ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পাবনা পৌর সভার মেয়র বরাবর একটি আবেদন করেন। পৌর কর্তৃপক্ষ গত ১২ সেপ্টেম্বর সৎসঙ্গ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে নির্মান কাজ বন্ধ রেখে তিন দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেন। কিন্ত সৎসঙ্গ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ পৌর কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে নির্মান কাজ চালিয়ে যান। ফলে ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে পৌর কর্তৃপক্ষ সৎসঙ্গ বাংলাদেশ’র বিধিবর্হিভূত ভবন নির্মান কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
একটি সুত্র দাবী করেছে, পাবনার পাথরতলায় ঠাকুর ভক্তদের জন্য আশ্রম নির্মান কাজকে কেন্দ্র করে বিপুল অংকের অর্থ তসরুপ করার অসৎ উদ্যোশ্যে সৎসঙ্গ বাংলাদেশের কতিপয় নেতার স্বৈরাতান্ত্রিক আচরণে সাধারন সৎসঙ্গীরা চরম ক্ষুব্ধ। এঘটনাকে কেন্দ্র করে সৎসঙ্গ বাংলাদেশ দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে সংগঠনে শৃঙ্খলাও ভেঙ্গে পড়েছে। পাবনাসহ দেশ-বিদেশে শ্রী শ্রী ঠাকুর অনূকূল চন্দ্রের অনুসারি সাধারন সৎসঙ্গীরা বিষয়টির দ্রæত সমাধান প্রত্যাশা করেছেন।
ঐ এলাকার বাসিন্দা রতœা খাতুন বলেন, এই স্থানে যখন ঠাকুরের কোন অনুষ্ঠান হয় তখন সারা দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ এখানে আসে। তাদের পায়খানা, প্র¯্রাব, থাকা খাওয়া নানা ঝামেলায় এলাকার পরিবেশ মারাতœক বিঘিœত হয়। সে কারণে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ। তারা পৌর কর্তৃপক্ষকে কাজ বন্ধ করার জন্য ধন্যবাদ জানান।
কফিলউদ্দিন নামে পাশের এক বাসিন্দা সৎসঙ্গের লোকজন পাবনা পৌরসভার নিষেধাজ্ঞাকে বৃধাংগুলি দেখিয়ে ভবন নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, পাবনার কোন শ্রমিক কাজ না করলেও দেশের অন্য স্থান থেকে নির্মাণ শ্রমিক নিয়ে এসে গোপনে দিনরাত কাজ করানো হচ্ছে।
গতকাল রোববার ঐ ভবন সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায় ৫ জন শ্রমিক ভবন নির্মাণে কাজ করছেন। তারা রাতেও এখানে থাকেন। আবার ভোর থেকে কাজ করেন। তাদের সবার বাড়ী চট্রগ্রামের মিরেশ্বরাই এলাকায়। অপর একটি সুত্র জানায়, পৌরসভার এক শ্রেণীর অসাধু কর্মচারীর যোগসাজশে গোপনে এই নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সৎসঙ্গ বাংলাদেশের সাধারন সম্পাদক ধ্রæতব্রত আদিত্য জানান, তিনি বাহিরে আছেন, পাবনা পৌর কর্তৃপক্ষের একটি নোটিশের কথা শুনেছি, এখনও হাতে পায়নি, পেলে বিস্তারিত জানাবো। তিনি বিষয়টির দ্রæত সমাধান হবে বলেও জানান।
এ ব্যাপারে পাবনা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানান, বিষয়টি তাদের গোচরে এসেছে। তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে পৌরসভার কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং নকশা বর্হিভুত কাজ হলে তা ভেঙে দেওয়া হবে।
Leave a Reply