শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
বাউয়েট এ, “সরকারী খরচে আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রম” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত নিখোঁজের দুইদিন পর যমুনা নদী থেকে কিশোরের বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার চরতারাপুরে বালু মহলে পুলিশের ওপর চেয়ারম্যানের লোকজনের হামলা, সরঞ্জাম জব্দ ভোগান্তি লাঘবে দাপুনিয়া বাজার অগ্রণী এজেন্ট ব্যাংক দারুণ সহায়ক বাউয়েটে ডিবেটিং সোসাইটির এক্সিকিউটিভ কমিটি ঘোষণা পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করলেন প্রক্টর মো. কামাল হোসেন পাবনা হাসপাতালে দালালের বিরুদ্ধে নার্সকে মারধরের অভিযোগে কর্মবিরতি বাউয়েট আইন অনুষদের তিন সদস্য বিশিষ্ট টিমের দিল্লি ল’ কনফারেন্সে অংশগ্রহন। মুক্তিতে বাধা নেই সাবেক এমপি সেলিম রেজা হাবিবের দুলাই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসীন্দাদের মাঝে উপজেলা প্রশাসনের কম্বল বিতরণ

পাবিপ্রবি প্রতিষ্ঠার ১৪ বছরেও প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পায়নি, ঘুরে দাঁড়ানোর আশা নতুন উপাচার্যের

বিশেষ প্রতিবেদক, পাবনামেইল টোয়েন্টিফোর ডটকম
  • প্রকাশিত রবিবার, ৫ জুন, ২০২২
Pabnamail24

প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ১৪ বছরেও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়। বিজ্ঞান শিক্ষায় বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হলেও প্রশাসনিক অদক্ষতা, অনিয়ম, দূর্নীতিতে বিতর্ক কখনোই পিছু ছাড়েনি বিশ্ববিদ্যালয়টির। গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রমে বেহাল দশায় পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ের একাডেমিক র্যাংকিংয়েও স্থান তলানিতে । এ নিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের হতাশা থাকলেও, অচিরেই তা কাটিয়ে ওঠার আশাবাদ সদ্য যোগ দেয়া উপাচার্যের।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ৫ জুন দেশের ২৯ তম পাবলিক ও সপ্তম বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় হিসেবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় । শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে রাজাপুরে ৩০ একর জায়গায় প্রতিষ্ঠা হয় স্থায়ী ক্যাম্পাস। ২০১৩ সালে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শুরু হয় শিক্ষা কার্যক্রম। বর্তমানে পাঁচ অনুষদের অধীনে রয়েছে ২১ টি বিভাগ। ৪ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন ১৭৮ জন। এর মধ্যে শিক্ষাছুটিতেই রয়েছেন ৩৫ জন।

প্রতিষ্ঠার একযুগের বেশি সময়ে বেড়েছে বিভাগ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সংখ্যা, অবকাঠামো উন্নয়নেও এসেছে বড় বরাদ্দ। উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্তাদের অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য, দূর্ণীতি, সুবিধাভোগী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ লুটসহ নানা নেতিবাচক খবরে বারবার শিরোনাম হয়েছে পাবিপ্রবি। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের দলাদলি, প্রশাসনিক বিশৃংখলায় গতি নেই শিক্ষা কার্যক্রমে। একাডেমিক র‌্যাংকিংয়ে ৪৬ পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ের মধ্যে পাবিপ্রবির স্থান ৪৪ তম। তীব্র সেশন জট, গবেষণাগার ও শিক্ষক সংকটে শিক্ষাজীবন ও ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশ শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী নুরুল্লাহ বলেন, শিক্ষক রাজনীতি, প্রশাসনিক বিশৃংখলায় বিশ^বিদ্যালয়ে প্রচন্ড সেশন জট। এর আগে উপাচার্য ড. এম রোস্তম আলীর সময়ে তা আরো প্রকট আকার ধারণ করে। আমরা বার বার আন্দোলন করেও এর কোন প্রতিকার করতে পারিনি।
আর্কিটেকচার বিভাগের শিক্ষার্থী শাবনাজ আক্তার বলেন, প্রশাসন ও শিক্ষকেরা সব সময় নিজেদের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত থেকেছেন। নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষা হয়নি। হতাশায় অনেকেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছেন। তবুও প্রশাসনের টনক নড়েনি। আশা করি নতুন উপাচার্য এসব বিষয়ে নজর দেবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে চার জন উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি পঞ্চম উপাচার্য হিসেবে যোগ দিয়েছেন ড. হাফিজা খাতুন। তবে সর্বশেষ বিদায়ী উপাচার্য ড. এম রোস্তম আলীর সময়ে একের পর এক দূর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, বাড়িভাড়া ফাঁকি, উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ লুটসহ নানা কারণে সবচেয়ে বেশী বিতর্কিত হয়েছে পাবিপ্রবি। পাবিপ্রবির আধুনিকায়নে প্রায় সাড়ে চারশ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ শুরু করে সদ্য সাবেক উপাচার্য ড. এম রোস্তম আলীর প্রশাসন। নানা দূর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে রোস্তম আলীর বিদায়ের পর সম্প্রতি পঞ্চম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ড. হাফিজা খাতুন। অতীতের জঞ্জাল সরিয়ে পাবিপ্রবিকে আলোর পথে ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেনএই নারী মুক্তিযোদ্ধার। আশাবাদী সাধারণ শিক্ষক- শিক্ষার্থীরাও।

পাবিপ্রবি কর্মকর্তা সমিতির সাবেক সভাপতি, রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চিহ্নিত কিছু সুবিধাভোগী সিন্ডিকেট উপাচার্য মহোদয়দের ঘিরে বলয় তৈরি করে সবকিছু নিয়ন্ত্রন করেছে। তাদের কাছে অনেক সময়ই জিম্মি হয়ে পড়েছেন উপাচার্যরা। এদের দাপটে সদিচ্ছা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যাশিত উন্নয়ন করতে পারেননি অতীতের ভিসি স্যারেরা। সদ্য যোগ দেয়া উপাচার্য ড. হাফিজা খাতুন এই বলয় এড়িয়ে পাবিপ্রবিকে আলোকিত করবেন।

নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান কনক বলেন, অতীতে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলার কারণে গবেষণায় সঠিকভাবে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়নি। বরাদ্দকৃত অর্থে কি গবেষণা হলো তাও মনিটরিং না করায়। গবেষণা কার্যক্রমে প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি। অনেক সম্ভাবনা থাকার পরেও পাবিপ্রবি কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছাতে পারেনি। আশা করছি নতুন প্রশাসন এসব বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন।

পাবিপ্রবির সদ্য যোগ দেয়া উপাচার্য ড. হাফিজা খাতুন বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে যে ধরণের পরিকল্পনা থাকা দরকার, এ বিশ্ববিদ্যালয় সেভাবে গড়ে ওঠেনি। প্রশাসন, কর্মকর্তা, শিক্ষক সবার মধ্যেই সমন্বয়হীণতা ছিলো। আমি যোগ দেয়ার পরেই এ বিষয়গুলোতে কাজ শুরু করেছি। সবাই সহযোগিতাও করছে। সবার মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য ফেরানোই আমার প্রথম লক্ষ্য। এখানে গবেষণা ও দক্ষ জনশক্তি তৈরির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। কথা নয় কাজেই আমি তা প্রমাণ করবো।

শেয়ার করুন

বিভাগের আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!