পাবনার ঈশ্বরদী পৌর এলাকায় মধ্যঅরণকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ঈশ্বরদী পৌর বিদ্যাপীঠ স্কুল মাঠের জায়গা ‘পজিশন’ হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুটি স্কুলের একটিই খেলার মাঠ। মাঠের জায়গায় পাকা ঘর তুলে নুরুল হক নামের স্থানীয় একজন ব্যবসায়ীর নিকট পজিশন হিসেবে বিক্রি করে দিয়েছেন মসজিদ-ঈদগাহ কমিটির সভাপতি ও ঈশ্বরদী পৌরসভার কাউন্সিলর ইউছুব আলী প্রধান, তবে পৌর কাউন্সিলর ইউছুব আলী প্রধান জানান, ওই জায়গা শুধু স্কুল মাঠেরই নয়, এ জায়গা ঈদগাহ ও মসজিদের তাই মসজিদের আয় বাড়াতে এটি ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শহরের মধ্যঅরণকোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯০ সালে পথকলি ট্রাস্ট নামে যাত্রা শুরু করে। পরে মধ্য অরণকোলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নাম ধারণ করে। পরবর্তীতে এটি সরকারিকরণ করা হয়। এই স্কুলের পাশে ঈশ্বরদী পৌর বিদ্যাপীঠ নামে আরেকটি হাইস্কুল গড়ে ওঠে। উভয় স্কুলের জন্য একখন্ড মাঠ রয়েছে। ওই মাঠটি ঈদগাহ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। জানাজা নামাজ ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানেও মাঠটি ব্যবহার করে থাকেন এলাকাবাসী। স্কুলটির দক্ষিণ পার্শ্বে মধ্যঅরণকোলা জামে মসজিদ রয়েছে। স¤প্রতি মসজিদটি ভেঙ্গে পুনরায় নতুনভাবে নির্মাণের প্রয়োজন দেখা দিলে স্কুলমাঠটির একাংশে টিনের অস্থায়ী স্থাপনা করে মুসুলিদের নামাজের ব্যবস্থা করা হয়। পরে মসজিদটির নির্মান কাজ সম্পন্ন হলে মুসুলিরা মসজিদে নামাজ আদায় শুরু করেন। কিন্তু অস্থায়ীভাবে নির্মিত স্কুলমাঠের স্থাপনাটি অপসারন না করে একজন ব্যবসায়ীর নিকট পজিসন হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
ওই এলাকার বাসিন্দা ও স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেন মুসা জানান, দুটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের খেলাধূলা করবার জন্য এই এলাকায় এই একটিই মাঠ রয়েছে। সেই মাঠের জায়গায় পাকা ঘর তুলে পজিশন বিক্রি করে দেওয়ার কারনে খেলার মাঠটি অনেকাংশে সংকুচিত হয়ে গেছে। এখন স্কুল দুটির ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকার শিশুদের খেলার কোনো জায়গা নেই বললেই চলে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে ঈশ্বরদী পৌরসভার কাউন্সিলর ইউছুব আলী প্রধান বলেন, মসজিদ ও ঈদগাহের উন্নয়নকল্পে টিনসেড পাকা ঘরসহ জায়গাটি স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল হকের নিকট ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী নুরুল হক মুঠোফোনে বলেন, মাসিক ৭ হাজার টাকা ভাড়ার চুক্তিতে ঘরসহ ওই জায়গা মসজিদ ও ঈদগাহ কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর ইউছুব আলী প্রধানের নিকট থেকে আমি আমার ব্যবসার প্রয়োজনে ভাড়া নিয়েছি।
ঈশ্বরদীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টি.এম রাহসিন কবির এ বিষয়ে বলেন, সরকারি কিংবা এমপিওভূক্ত কোন স্কুলের খেলার মাঠ সরকারের অনুমোদন ব্যাতিরেকে স্কুল কমিটি কিংবা কেউ পজিসন বিক্রি অথবা ভাড়া দিতে পারেন না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এ বিষয়ে পাবনা জেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার মুনসুর রহমান বলেন, আমি ছুটিতে আছি, অফিসে যোগদানের পর খোঁজ নিয়ে দেখবো।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পি.এম ইমরুল কায়েস বলেন, ঘটনাটি আমার জানা ছিল না, যাচাই বাছাই করে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply