পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর ইউনিয়নে নৌকা সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নারীসহ অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। হামলায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ একজনকে আটক করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার বিকেলে ইউনিয়নের মতিগাছা বাজারে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী কে এম শাহীনের সমর্থক জাহিদ প্রামাণিকের বাড়িতে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাইমেন হোসেন চঞ্চলের সমর্থক নিফাজ উদ্দিন ও আফাই মোল্লার নেতৃত্বে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা জাহিদ প্রামাণিকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আনারসের সমর্থকদের নৌকার পক্ষে মাঠে নামতে বলে। জাহিদ তাদের কথায় রাজি না হওয়ায় লোহার রড ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে সন্ত্রাসীরা। তাকে বাঁচাতে বাড়ীর নারী সদস্যরা এগিয়ে এলে তাদেরও রড ও লাঠি সোটা দিয়ে পিটিয়ে আহত করে তারা। একই কারণে সন্ত্রাসীরা পাশর্^বর্তী ছগির প্রামাণিকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ছগির প্রামাণিক ও তার পরিবারের সদস্যদের পিটিয়ে আহত করে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে গুরুত্বর আহত জাহিদ প্রামাণিক (৫৫) ও ছগির প্রামাণিক (৬৫) কে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
আহত জাহিদ প্রামাণিকের মেয়ে সাদিয়া জানায়, দুপুরের পর পর হঠাৎ করেই সন্ত্রাসীরা আমার অসুস্থ বাবাকে ঘর থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে নিয়ে আসে। আফাই মোল্লা ধমক দিয়ে বাবা কেন নৌকার ভোট করছেনা জানতে চান। এক পর্যায়ে তাদের সাথে ভোটের প্রচারণায় যেতে বলেন। অসুস্থ থাকায় বাবা বাইরে যেতে রাজি না হলে নিফাজ উদ্দিন, মুক্তার, ঠাণ্ডু, জানাই ও বান্ডুর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা রড ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাবাকে কুপিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়। আমরা বাবাকে ছেড়ে দিতে তাদের কাছে মিনতি করলে তারা আমাকে ও আমার মা রোমেছা বেগম (৪৫) কেও পিটিয়ে আহত করেছে।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি থাকা গুরুতর আহত বৃদ্ধ ছগির প্রামাণিক জানান, আনারসের পক্ষে ভোট করায়, আফাই মোল্লার নেতৃত্বে বিকেলে আমার বাড়িতে শতাধিক সশস্ত্র লোক হামলা করেছে। তারা আমাকে ও আমার ছেলে রফিকুল (৩২), পুত্রবধু জান্নাত (২৮), স্ত্রী লতিফা (৫০) কে বেধড়ক পিটিয়েছে। নৌকায় ভোট না দিলে আমাদের এলাকায় থাকতে দেয়া হবেনা বলেও শাসিয়ে গেছে তারা।
হামলার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে বিচার দাবি করেছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী কে এম শাহীন ও তার সমর্থকরা।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী কে এম শাহীন অভিযোগ করে বলেন, কয়েকদিন আগে নির্বাচনী প্রচারনায় আমার কর্মী-সমর্থকদের উপর নৌকার প্রার্থী মোহাইমিন হোসেন চঞ্চলের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে আমার কর্মী সেলিম হোসেনকে হত্যা করেছে। সে ঘটনাকে হার্ট এট্যাক বলে ধামাচাপা দেয়া হয়েছে। এখন শেষমূহুর্তে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমার কর্মীদের হত্যা চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি প্রশাসনের নিকট এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এদিকে, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হামলায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করেছে। আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজ রহমান বলেন, শুক্রবার বিকেলে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হবার কথা শুনেছি। গুরুত্বর আহত দুজনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে এ ব্যপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে, হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকার প্রার্থী মোহাইমিন হোসেন চঞ্চল বলেন, হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী মিথ্যা অভিযোগ করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
Leave a Reply